ভাবনারা যখন ‘জীবনটা কেন এমন’ এই প্রশ্নে এসে থমকে দাঁড়ায়! মনের আশা জাগানিয়া শব্দরা মেঘের আড়ালে
গিয়ে লুকায়! কি পেয়েছি আর কি চেয়েছিলাম দ্বন্দ্বের কুয়াশা! ঘন আঁধারের চাদর নিয়ে
এগিয়ে আসে হতাশা! অপূর্ণ স্বপ্নদের পানে না চাইতেও চোখ চলে যায় বার বার! মরীচিকায়
পেছনে ছুটে নিরাশ হয় মন আবারো আরেকবার! আল্লাহতে রেখে দৃঢ় বিশ্বাস এগিয়ে চললে
আগামীর তরে! দুরাশার গোলোক ধাঁধা ব্যর্থ মনোরথে হারিয়ে যায় কালের গহ্বরে!
সত্যিই কি সকল দুরাশা কালের গহ্বরে হারিয়ে যায় ম্যাম?
সাবিরার প্রশ্ন শুনে তারা ভরা কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ থেকে দৃষ্টি
নামিয়ে ফাতিমা ও সাবিরার দিকে তাকালো নূহা। রাতের খাবার সেরে দুজনকে
নিয়ে টেরেসে এসে বসেছে। নিজের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে খুবই
মর্মাহত কন্ঠে বলে উঠেছিল সাবিরা, আমার জীবনটা কেন এমন হলো? কেন
শরীয়তের আলোয় আলোকিত কোন পরিবারে আমার জন্ম হলো না? কেন
আমার চারপাশের মানুষগুলো দুনিয়া নিয়ে মত্ত, বিভোর
হয়ে আছে? কেন তাদের জীবনটাকে লক্ষ্যহীন, উপলব্ধিহীন
কাটিয়ে দিচ্ছে? নিজেরা তো ভুলের পথে চলছেই, আমাকেও
ভুলের পথে চলতে বাধ্য করতে চাইছে। কিন্তু কেন? নূহার
জানা আছে সবসময় প্রশ্ন শোনার সাথে সাথেই জবাব দিতে নেই। মাঝে মাঝে কারো অবুঝ কথা
শোনামাত্রই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে নেই। কারণ কিছু কিছু মূহুর্তে প্রশ্নের সঠিক
জবাব চিন্তাকে আরো বিশৃঙ্খল করে দেয়। বোঝাতে গেলে মন আরো অবুঝ ও জেদী হয়ে ওঠে।
সাবিরার মন অনেকটা এমন পথ ধরে হাঁটছে বুঝতে পেরে ওর কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চুপ
করেছিল নূহা। কিন্তু একটা সময় নিজের অজান্তেই নূহার মনে জড়ো হওয়া ভাবনারা শব্দের
আকারে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছিল। যা নতুন আরেকটি প্রশ্নের খোঁড়াক জুগিয়েছে
সাবিরাকে। তবে এই মূহুর্তে সাবিরার কোন প্রশ্নের জবাবই দিতে চাচ্ছিলো না নূহা। তাই
হাসি মুখে বলল, কুয়াশা রাতের আকাশের সৌন্দর্যে বিমুগ্ধ হয়ে কাব্য রচনা করার
সুযোগটা কেমন ছিনিয়ে নেয়। তাই না?
কুয়াশা অধম বলে আমরা উত্তম হবো না কেন? তাই
কুয়াশাকে নিয়ে কাব্য রচনা করে বিষে বিষ ক্ষয় করি চলেন ম্যাম। হাসতে হাসতে বললো
ফাতিমা। ফাতিমার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে সাবিরাও হেসে ফেললো।
নূহাও হেসে বলল, আইডিয়াটা
অবশ্য মন্দ না। আচ্ছা চলো ট্রাই করি কুয়াশা ভেদ করে সম্মুখে ছুটে চলার। নূহার সাথে সাথে
সাবিরা আর ফাতিমাও গভীর চোখে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ পানে তাকালো। সন্ধ্যার তারায় তারায়
খচিত আকাশ রাত গভীর হবার সাথে সাথে ঢাকা পড়ে গিয়েছে কুয়াশার ঘন চাদরে। ঘুমিয়ে
পড়েছে আশপাশের বাড়িগুলোও। সবসময়ই এমন নিস্তব্ধতার আঁধারে ঘেরা নীরব প্রকৃতি নূহার মনকে
নিমগ্নতায় অথৈ জলে ডুবিয়ে দেয়। সমুদ্রের ফেনার মতো তখন ভেসে আসে রাশি রাশি
বর্ণমালা। অনুভূতিরা তরঙ্গ জোয়ারে উদ্বেলিত হয়, সুখ-দুঃখ
মনের খোরাক যোগায় নিঃসঙ্গতায়, হৃদয়কে আন্দোলিত করা স্বপ্ন-আশা-ভালোবাসা, একাকীত্বের
সঙ্গতায় জেগে থাকে বিলাসিতায়। আশারা মেঘ হয়ে জমতে থাকে মনের আকাশে, কখনো
জোছনা কখনো অমাবস্যার আবেশে, অচেনা-অজ্ঞাত উপলব্ধি ছাড়িয়ে পড়ে মনের বাতাসে, অসীম
শূন্যতার মাঝে আপন সত্ত্বা নিজ অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায় হঠাৎ প্রকাশে। নিজেকে
জানা-বোঝা ও চেনার জন্য আসলে নিজের সাথে একাকী কিছুটা সময় কাটানো খুব দরকার। দরকার
নিজের সাথে একান্ত বোঝাপড়ার। এমন মূহুর্তগুলো তাই নিজের সাথে বোঝাপড়া করেই কাটায়
নূহা বেশির ভাগ সময়।
ম্যাম বলুন না কিছু আমাদেরকে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে ঘিরে। আবদারের
সুরে বললো সাবিরা।
নূহা হেসে বলল, প্রথম প্রথম যখন ছবি আঁকা শিখেছিলাম আমি শুধু আকাশের ছবি আঁকতাম।
তবে আমার আঁকা আকাশে নীলের ছটা খুব অল্প থাকতো। আমি নানান রঙের আকাশ আঁকতাম।
সবচেয়ে বেশি আঁকতাম বেগুনী রঙা আকাশ। একটা সময়ে গিয়ে উপলব্ধি করলাম আমার আকাশটাকে
আমি কত রঙে আঁকি! কখনো বেগুনী, কখনো সোনালী, কখনো বা বর্ণিল! কিন্তু সম্মুখের ঐ আকাশের রঙ নীলই থেকে যায়! আমার
বর্ণিল রঙের ছটা ক্যানভাসের গণ্ডি পেড়িয়ে কখনোই আকাশকে ছুঁতে পারে না। আবার অন্য
একটি ক্ষেত্রেও হুবহু একই অনুভূতি হয়েছিল। আমার মনটাকে আমি কত যতনে যে গড়ে চলেছি!
উন্মুক্ত করে, সুবাসিত করে, আশা জাগানিয়া করে! কিন্তু চারপাশের মানুষের মনগুলো ফ্যাকাসেই রয়ে
যায়! নিজেকে উন্নত করার কত শত নিয়ম বেঁধেছি! পুনঃপুন সাধনায় হয়ে উঠছি
নিয়মানুবর্তী! তবুও অনিয়মের আখড়াতেই ঘুরে ফিরি বারংবার! অতঃপর উপলব্ধি করেছিলাম, আমি
শুধু আমাকেই গড়তে পারি, ভাঙতে পারি, সাজাতে পারি, যেমন খুশি রাঙাতে পারি! কিন্তু অন্য কারো কাছে আশা করতে পারিনা যে, আমার
রঙে সেও রাঙাবে নিজেকে।
সাবিরা হাসি মুখে বলল, আমি
আপনার কথা বুঝতে পেরেছি ম্যাম। আমার নিজেকে গড়তে হবে। নিজেকে উন্নত করতে হবে।
অন্যরা কেন নিজেকে গড়ছে না, উন্নত করছে না সেসব ভেবে হা হুতাশ করা যাবে না। তাই না?
হাত বাড়িয়ে সাবিরার হাতের উপর হাত রাখলো নূহা। খুব বেশিদিন হয়নি
ফাতিমা ও সাবিরার সাথে পরিচয়ের। কিন্তু মেয়ে দুটিকে খুব আপন
মনেহয়। ওদের মনে জমে থাকা সব ম্লানতাকে ঘষে ঘষে তুলে ফেলে, স্বিগ্ধতার
রঙে রাঙিয়ে দিতে ইচ্ছে করে ওদের মনোজগত। আজ সারাদিনে যতটুকু সময় পেয়েছে এই কাজটি
করারই চেষ্টা করেছে। কিন্তু ঠিক বুঝতে পারছে না ফাতিমা ও সাবিরাকে বুঝিয়ে বলতে
সক্ষম হয়েছে কিনা যে, জীবনটা আল্লাহর দেয়া এক আমানত আমাদের জন্য। এটাকে তাই
অজ্ঞতা-অসন্তোষ ও আত্ম-অত্যাচারের দ্বারা নষ্ট করার কোন অধিকার আমাদের নেই। আর
একমাত্র শুদ্ধ জ্ঞানার্জনের দ্বারাই মনে এই বোধের জন্ম হওয়া সম্ভব। কেননা মন ও
মনন যদি সঠিক জ্ঞানের আলোতে আলোকিত না হয় তাহলে নিজেকে ঠিকভাবে দেখতে পারে না
মানুষ। বুঝতে পারে না তার করণীয় ও বর্জনীয়। যারফলে তারমধ্যে যে জোনাকির মত
একবিন্দু আলো আছে সেটা দ্বারা না নিজেকে আলোকিত করতে পারে, না
ছড়িয়ে দিতে দূর থেকে বহুদূরে।
ম্যাম সন্ন্যাসী হয়ে যাবার আইডিয়াটা কেমন বলেন তো? ফাতিমার
প্রশ্ন শুনে ভাবনার জগত থেকে বেড়িয়ে এলো নূহা। হেসে বলল, আইডিয়ার
পেছনে কারণগুলো জানার আগে বলতে পারছি না যে আইডিয়াটা ঠিক কেমন।
অনেকগুলো কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি ম্যাম। আচ্ছা আপনাকে আমি
বলছি। আমার মনের ভিতর যে রাজ্যটা আছে সে রাজ্যের রাণী একা থাকতে পছন্দ করেন। নিরবতা, নিস্তব্ধতা, নিবিড়তা, শান্ত-স্বিগ্ধ
পরিবেশের প্রতি তীব্র আকর্ষণ তার। ইচ্ছে মত যখন যেখানে ইচ্ছে ঘুরতে বেড়াতে চায় সে।
চায় যখন যে আপন মনে চিন্তা ভাবনা করবে তখন কেউ এসে বাঁধাগ্রস্ত না করুক তাকে। গুহা
আর পাহাড়ে ধ্যান করাটা তাঁর স্বপ্ন। রাসুল (সাঃ) হিরা গুহাতে ধ্যানরত ছিলেন, জানার
পর থেকেই এই ইচ্ছাটা মনে বাসা বেঁধেছে। বড্ড স্বাধীনচেতা সে তবে বিদ্রোহী নয়। মনে
প্রাণে চায় তার নিজের একান্ত একটা সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে। কেউ যেখানে নাক গলাতে
আসবে না, কেউ নাক উঁচুও করবে না যে সিদ্ধান্ত শুনে। মোটকথা এমন অন্ধ বন্ধন
থাকবে না যাতে করে চাইলেই সে বিভিন্ন আত্মোন্নয়ন মূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে।
সন্ন্যাসীরা সাধারণত ঘর ছাড়া কিন্তু সে ঘরে থেকে সন্ন্যাসী হতে চায়। সে সন্ন্যাসী হতে চায় সমাজকে নতুন করে নতুন
রূপে সাজাতে। ম্যাম এবার বলেন আইডিয়াটা কেমন?
নূহা হেসে বলল, তোমার আইডিয়াটা কেমন সেটা পরে বলছি। তবে তোমার সন্ন্যাসী হতে
চাইবার কারণটা অনেক সুন্দর। কিন্তু সমাজকে নতুন করে নতুন রূপে সাজাতে হলে আগে
নিজেকে নতুন করে নতুন রূপে সাজাতে হবে। বলে না যে, নিজেকে
গড়ো অতঃপর জগতটাকে। সুতরাং, আগে নিজেকে গড়তে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নিজেকে গড়ার জন্য সন্ন্যাস
জীবন ধারণ করার যোগ্যতা তোমার আছে কিনা? প্রশ্নটা
বুঝিনি ম্যাম। আচ্ছা বুঝিয়ে বলছি। যেমন ধরো আমাদের এই দুনিয়াবী জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে জান্নাত লাভ। এখানে লক্ষ্য হচ্ছে জান্নাত আর
মাধ্যম হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। এখন যদি প্রশ্ন করা হয় জান্নাত লাভের জন্য কি
করতে হবে? জবাব হচ্ছে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি কিভাবে অর্জন
করবো? আল্লাহর পাঠানো শরীয়তের বিধান মত জীবন যাপন করে। ঠিক তেমনি তোমার
লক্ষ্য সমাজকে নতুন করে নতুন রূপে সাজানো। মাধ্যম হিসেবে তুমি বেছে নিয়েছো
সন্ন্যাস জীবনকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তোমার সন্ন্যাস জীবনের ভিত্তি কি? কিসের
আলোকে তুমি সমাজকে নতুন করে নতুন রূপে সাজাতে চাও?
অবশ্যই শরীয়তের আলোকে ম্যাম।
কিন্তু শরীয়ত তো সন্ন্যাস জীবন সমর্থন করে না। সূরা নাহলের ৯নং
আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-“ সরল পথ আল্লাহ্র দিকে পরিচালিত করে,কিস্তু
পথগুলির মধ্য বক্রপথও আছে। আল্লাহ্ যদি ইচছা করতেন তবে তিনি সকলকেই সৎ পথে
পরিচালিত করতে পারতেন।” এই আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছে-“ এই
পার্থিব জীবন,হাসি, কান্না,ভালোবাসা,হিংসা-দ্বেষ,লোভ-লালসা
দ্বারা আবৃত। আর এ সব মিলেই আমাদের পৃথিবীর জীবন। সংসার ত্যাগ করে বনে গিয়ে
আল্লাহ্কে পাওয়ার এবাদত ইসলাম স্বীকার করে না। এই পার্থিব জীবনের মাধ্যমে
স্রষ্টাকে পাওয়ার সাধনাই হচেছ ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ্ ইচছা করলে মানুষকে
"সীমিত স্বাধীন ইচছা শক্তি''দান না করলেও
পারতেন। তাহলে ফেরেশতা বা অন্যান্য জীবন্ত প্রাণীজগতের মত তাকে পরকালে জবাবদিহিতার
সম্মুখীন হতে হতোনা। কিন্তু স্রষ্টার পরিকল্পনা হচ্ছে মানুষের ইচ্ছা শক্তিকে
প্রশিক্ষিত করা,যেনো সে স্ব-ইচছায় স্রষ্টার ইচছার কাছে
আত্মসর্ম্পন করে।” সুতরাং, আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে দুনিয়াতে কোন সমস্যাগ্রস্ত মানুষ ও সমস্যা
কিছুই থাকতো না। তাহলে আমাদের জীবনটা পরীক্ষাও হতো না। তাই প্রতিকূলতার মধ্যেই
দিনযাপন করতে করতে আমাদেরকে নিজ নিজ লক্ষ্য পানে ছুটে চলতে হবে। কি মুখ ভার হয়ে
গেলো কেন?
ফাতিমা হেসে বলল, না ম্যাম আমি ঠিক আছি।
নূহা হাসি মুখে বলল, তুমি
যে রাস্তায় চলছিলে আর আমি তোমাকে নিয়ে এলাম আরেক রাস্তায়। মুখ ভার হওয়া তো
স্বাভাবিক। দেখো নিজের সাথে কিছুটা সময় একা কাটানো অবশ্যই উচিত সবার। কিন্তু মন
যদি সবসময় একা থাকতে চায় সেটা শুধু অনুচিতই নয়, মনের
এই চাওয়া অতি ভয়ংকর। একাকী মানে তার ভুলকে দেখার ও শুধরে দেবার কেউ নেই। আর এই
দাবী কেউ করতে পারবে না যে অন্যের সাহায্য ছাড়াই সে নিজের দোষ-ত্রুটি সর্বাবস্থায়
যাচাই বাছাই করতে পারে। সুতরাং, মন সর্বদা একা থাকতে চাইলে তাকে কান ধরে হিড়হিড় করে টেনে জনসম্মুখে
নিয়ে আসতে হবে। ফাতিমা হাসতে হাসতে বলল, আপনি
সত্যিই আরেক রাস্তায় চলে গিয়েছেন ম্যাম। আমি এভাবে ভাবিনি। তাহলে এখন ভাবো।
দেখো সমাজকে গড়তে হলে আগে নিজকে গড়তে হবে। আর একা একা কখনোই নিজকে গড়া সম্ভব নয়।
কুরআন ও হাদীস থেকে জ্ঞানার্জন করতেও তোমার অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হবে। আর তোমার
মন যা কিছু কল্যাণকর ভাবছে, তার সবই যে তোমার জন্য কল্যাণকর হবে এমন তো কোন গ্যারান্টি নেই।
সুতরাং, তোমার স্বাধীন ইচ্ছাকে বা চিন্তাকে বাঁধাগ্রস্ত করার মত কেউও থাকা
দরকার পাশে। যাতে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষন করা যায় নিজের চাওয়া গুলোকে। তাছাড়া
জীবনে যা চাইবো তার সবই আমাকে পেতে হবে এমনো তো কোন নিয়ম নেই। কোন কিছু চাওয়ার পথে
যদি কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তবে ধরে নেবে ঐটা তোমার প্রাপ্য ছিলই না। আর আমার
অভিজ্ঞতা তো অন্য কথা বলে।
কি ম্যাম?
কোন কিছু মনে প্রাণে চাওয়ার পরও যখন আমরা সেটা পাই না। তার অর্থ
হচ্ছে এরচেয়েও ভালো কিছু আমাদের জন্য প্রতীক্ষমাণ। দেখো আমার মতে সন্ন্যাসী হওয়া
মানে নিজের সংশোধনের পথ বন্ধ করে দেয়া। আর সংস্কার বিহীন কারো পক্ষে সমাজকে দেবার
মত কিছু থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। তাই আমাদেরকে সংসারের মাঝেই থাকতে
হবে। এবং সব প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করতে করতেই নিজেকে গড়তে হবে এবং সমাজকে সাজানোর
চেষ্টা করতে হবে। যাইহোক, তুমি ভেবে দেখতে পারো আমার কথাগুলো। সবসময় যে আমার সব কথা তোমাদের
পছন্দ হতেই হবে এমন কোন নিয়ম নেই। ভাবতে থাকো তোমরা দুজন। আমি ততক্ষণে সবার জন্য
কফি নিয়ে আসি।
ফাতিমা আর সাবিরা হাসি মুখে বলল, জ্বি
ম্যাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন