পেছন থেকে ডাক শুনে ঘুরে তাকালো জাওয়াদ। মামণিকে তার দিকে এসিয়ে আসতে দেখে হাসি মুখে সালাম দিলো। সালামের জবাব দিয়ে মিসেস সুরাইয়া বললেন, আমার একটা কাজ করে দিতে পারবি বাবা?
জাওয়াদ বলল, জ্বি ইনশাআল্লাহ। কি কাজ বলো মামণি।
দুপুরে নূহা এসেছিল। ওদিকের কোন শপেই নাকি কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য বাগান থেকে কাঁচামরিচ তুলেছিল নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু যাবার সময় নিতে ভুলে গিয়েছে। এখন ফোন করে ঘ্যানঘ্যান করছে কাউকে দিয়ে কাঁচামরিচ পাঠিয়ে দেবার জন্য। বাড়িতে তো মুহিব, মঈন ওরা কেউই বাড়িতে নেই। ঐদিকে মেয়ের ঘ্যানঘ্যান শুনে তোদের বাবাই রেডি হচ্ছেন যাবার জন্য। তুই কাউকে দিয়ে কাঁচামরিচ পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হতো।
কিন্তু এত রাতে কাঁচামরিচের জন্য এমন অস্থির হয়েছে কেন তোমার কন্যা?
ওর নাকি সদ্য গাছ থেকে তোলা কাঁচামরিচ দিয়ে ঝাল ঝাল আলুভর্তা খেতে ইচ্ছে করছে।
ঝাল ঝাল আলুভর্তা করার জন্য কাঁচামরিচের কি দরকার? তোমার মেয়ে নিজ হাত দিয়ে ভর্তা মাখালেই তো ঝালে মুখে পুড়ে যাবার কথা।
মিসেস সুরাইয়া হেসে ফেলে বললেন, তাতে তোর আর আমার মুখ পুড়বে। নিজের ঝাল কি আর মানুষ নিজে টের পায়?
জাওয়াদ হাসতে হাসতে বলল, পয়েন্ট। ঠিকআছে প্যাকেট এনে দাও আমাকে। পাঠানোর ব্যবস্থা করছি ইনশাআল্লাহ।
মিসেস সুরাইয়ার কাছ থেকে প্যাকেট নিয়ে নূহাকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে কটেজে ঢুকে একদম পিনপতন নীরবতা দেখে বেশ অবাক হলো জাওয়াদ। পড়ার সময় আর ঘুমের সময় ছাড়া জিশান আর নাবিহা সারাক্ষণই চিৎকার-চেঁচামেচি করতেই থাকে একে অন্যের সাথে। সবসময়ই ওদের ঝগড়ার গুঞ্জরন স্বাগত জানায় জাওয়াদকে। কিন্তু আজ কারো কোন শব্দ না পেয়ে অবাক হবার সাথে সাথে বুকের ভেতর মৃদু কম্পনও শুরু হয়ে গেলো। নূহা এসেছিল। মায়ের সাথে আবার দল বেঁধে চলে যায়নি তো তিনজন?! দুরু দুরু বুকে বাচ্চাদের হলরুমে উঁকি দিতেই প্রশান্তির হিমেল বাতাস বয়ে গেলো অন্তর জুড়ে। পড়ার টেবিলে বসে গালে হাত দিয়ে উদাস চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে গভীর কোন ভাবনাতে নিমগ্ন জিশান। পুত্রের ধ্যান ভঙ্গের জন্য ইচ্ছে করেই বেশ শব্দ করে রুমের ভেতর ঢুকলো জাওয়াদ। কিন্তু জিশানের কোন ভাবান্তর হলো না। এত গভীর মনোযোগ সহকারে কি ভাবছে দুষ্টু ছেলেটা? ভাবতে ভাবতে হাত বাড়িয়ে পাশ থেকে ওয়াটার গান তুলে নিলো জাওয়াদ। জিশানের ভাবনায় ছেদ ফেলার লক্ষ্যে ওয়াটার গান দিয়ে শূট করলো।
জিশান লাফিয়ে উঠে চিৎকার করে বলল, পাপা কি করছো তুমি? দেখো পুরো ভিজিয়ে দিয়েছো আমাকে। ছোট বাচ্চার সাথে এই ধরণের দুষ্টুমি করার জন্য লজ্জা পাওয়া উচিত তোমার। শেম অন ইউ।
জাওয়াদ হেসে বলল, আচ্ছা যাও লজ্জা পেলাম। তা ছোট বাচ্চাটা এমন আত্নমগ্ন হয়ে কি ভাবছিল সেটা কি জানতে পারি?
তার ভাবনা জানতে চাওয়াতে পাপা যে তাকে ভিজিয়ে দিয়েছে সে অপরাধ একদম ভুলে গিয়ে বিশাল হাসি দিয়ে জিশান বলল, পাপা জিশান অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবছিল।
জাওয়াদ হেসে বলল, আগে টিশার্ট বদলে এসো এরপর তোমার গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা শুনবো।
ভেজা টিশার্ট বদলে এসে পাপার পাশে বসে জিশান বলল, আমি আনকমন কিছু আবিষ্কারের কথা চিন্তা করছিলাম পাপা। যেমন ধরো এমন একটা চশমা যদি বানানো যেত যেটা চোখে লাগিয়ে বইয়ের দিকে তাকানোর সাথে সাথে সব পড়া মুখস্ত হয়ে যাবে। আবার ধরো মশা মারার মতো একটা স্প্রে যদি বানানো যায় যেটা দুষ্টু বাচ্চাদের উপর স্প্রে করলেই তাদের দুষ্টুমিগুলো মারা যাবে। বলো না পাপা কেমন হতো?
এই ধরণের কয়টা ভাবনা আছে তোমার?
জিশান নড়েচড়ে বসে একটু চিন্তা করে বেশ ভাব নিয়ে বলল, আপাতত সব মিলিয়ে মোট আটটা আছে। তুমি এসে ভাবনাতে বাগড়া না দিয়ে এতক্ষণে আরো দু’চারটা ভাবনা ঠিকই ভেবে ফেলতাম ইনশাআল্লাহ।
আট বার কান ধরে উঠ-বোস করে পড়তে বোস।
জিশান চোখ বড় বড় করে বলল, কান ধরে উঠ-বোস করবো কেন?
জাওয়াদ ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, কান ধরে উঠ-বোস আপনার ভাবনার পুরষ্কার বাপজান। যান কান ধরে উঠ-বোস করে আসেন।
দুঃখী দুঃখী কণ্ঠে জিশান বলল, কান ধরে উঠ-বোস কি করতেই হবে পাপা?
অবশ্যই করতে হবে।
পাপা আমিও অবশ্যই কান ধরে উঠ-বোস করতে চাই। পিতার আদেশ অমান্য করা স্বভাবের ছেলে জিশান মোটেই নয়। কিন্তু একটু আগেই নানুমণি আমাকে ইয়া বড় গ্লাস সয়ামিল্ক খেতে বাধ্য করেছে। এখন কান ধরে উঠ-বোস করতে গেলে বমি হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। তখন আবার তোমাকেই কষ্ট করে পরিষ্কার করতে হবে। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না পাপা। তাই এই আটটা কান ধরে উঠ-বোসও বাকি শাস্তির সাথে জমা রেখে দেই। অন্য সময় সব আদায় করে ফেলবো ইনশাআল্লাহ।
সেটা নাহয় মেনে নিলাম। কিন্তু তুমি তো শুধু শাস্তি জমিয়েই চলছো। আদায় করতে তো দেখি না কখনোই।
জিশান সবগুলো দাঁত বের করে বলল, আলহামদুলিল্লাহ মাঝে মধ্যে কাটাকাটি হচ্ছে তো পাপা। গত মাসেই তো দাদাভাইকে বাগানের কাজে সাহায্য করার জন্য তুমি ত্রিশটা কান ধরে উঠ-বোস মাফ করে দিয়েছিলে। জিশান আরো বেশি বেশি ভালো কাজ করবে এখন থেকে ইনশাআল্লাহ। তখন ভাইয়া আর নাবিহার মতো জিশানেরও শুধু পুরষ্কার জমা হবে।
জাওয়াদ হাসি মুখে বলল, ইনশাআল্লাহ। সয়ামিল্ক সত্যি সত্যিই খেয়েছিলে তো? ফেলে দাওনি তো আড়ালে?
পাপার কোল ঘেঁষে বসে আনন্দিত কন্ঠে জিশান বলল, সত্যি সত্যিই খেয়েছি। মা বলেছে মেডিসিন মনে করে খেয়ে নিতে। এরপর থেকে আর অতটা ইয়াক লাগে না সয়ামিল্ক। পাপা একটা তথ্য শুনবে?
অবশ্যই শুনবো। আপনার তথ্য মিস করার মত বোকা তো আমি এখনো হইনি।
জিশান হেসে বলল, এই তো তুমি লাইনে এসেছো। পিতা বেলাইনে থাকলে পুত্রের যে কত দুঃখ হয় সেটা তুমি বুঝবে না।
জাওয়াদ ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে হাসতে হাসতে বলল, দুষ্টুমি মেরে ফেলার স্প্রে আবিষ্কার হলে সবার আগে আমি কিনবো। আর তোমার উপর স্প্রে করবো বুঝেছো? কঠিন দুষ্টু একটা বাচ্চা তুমি। তোমার তথ্য পরে শুনবো। আগে আমাকে তথ্য দাও জিহাদ আর নাবিহা কোথায়?
ভাইয়া মনেহয় জাল দাদাভাই সাথে লাইব্রেরীতে। নাবিহা তুমি আসার কিছুক্ষণ আগে বড় কটেজে গিয়েছে কাশফিয়াকে হোমওয়ার্ক করতে সাহায্য করার জন্য।
আচ্ছা। এখন তোমার তথ্য বলো শুনি।
মূহুর্তেই জিশান চেহারাতে সিরিয়াস ভাব ফুটিয়ে বলল, ঠিক তথ্য না পাপা। বলতে পারো আমার একটা আত্মোপোলব্ধি।
ঠিকআছে তোমার আত্মপোলব্ধিটাই বলো শুনি।
পাপা এই যে তোমরা জুরাইরিয়া খালামণি, নায়লা খালামণিদের জন্য, আবার মঈন মামা, মুহিব মামাদের জন্য স্পেশাল কোর্সের ব্যবস্থা করছো। যাতে উনারা আরো ভালো মানুষ হতে পারেন, আদর্শ মুসলিম হতে পারেন সেজন্য। আমার মনেহচ্ছে, বাচ্চাদের জন্যও এমন একটা ট্রেনিং সেন্টার করা উচিত। কারণ শিশুদেরকে তো ছোটবেলা থেকেই গড়ে তুলতে হয়, তাই না?
জাওয়াদ হেসে বলল, অবশ্যই তাই। কিন্তু তোমাদের জন্য এই ব্যবস্থা আগে থেকেই করা হয়েছে। উইকএন্ডে তোমাদেরকে স্পেশাল ক্লাসও তো দেয়া হচ্ছে নিয়মিত।
তুমি আমার কথাটা বুঝতে পারছো না পাপা। আমি তো শুধু আমাদের কথা বলছি না। জুনিয়র গ্রুপের ট্রেনিংয়ে যেমন খালামণি আর চাচ্চুদের সাথে সাথে উনাদের কিছু ফ্রেন্ডরাও অংশগ্রহণ করছেন। আমি তেমন চাচ্ছি কিডদের জন্যও এমন একটা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হোক। যাতে আমার, ভাইয়ার, নাবিহার, জারিফ এবং আমাদের অন্যান্য ভাইবোনদের ফ্রেন্ডরাও অংশগ্রহণ করবে। কয়েকদিন আগে জাল দাদাভাই তাফসীর পড়ানোর সময় আমাদেরকে বলেছিলেন, ইবাদত ও অন্যান্য সৃষ্ট জীবের সেবার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তোষ অর্জন করা মুসলিমদের জীবনের মূল লক্ষ্য। ছোটবেলা থেকেই তো এই অর্জনের চেষ্টা করা উচিত তাই না? আমাদের ক্লাসের মুসলিম ছেলেমেয়েগুলো খুব দুষ্টু। আমি ওদেরকে ভালো করার জন্য কিছু একটা করতে চাচ্ছি। তুমি জানো গত সপ্তাহে কি হয়েছে?
কি হয়েছে?
আমাদের ক্লাসের রেবেকা আমাকে খুবই দুষ্টু কথা বলেছে। সেদিন থেকেই আমার মনে এই চিন্তাটা এসেছে। পাপা প্লিজ তুমি আমাদের জন্যও একটা ট্রেনিং সেন্টারের ব্যবস্থা করো। যাতে আমরা অন্তত দুষ্টু মুসলিম বাচ্চাদের ভালো করতে পারি।
ছেলেকে বুকে টেনে
নিয়ে জাওয়াদ হাসিমুখে
বলল, তোমার আত্মোপোলব্ধির সাথে আমি সম্পূর্ণ রূপে সম্মতি
পোষণ করছি। অবশ্যই
আমি এই ব্যাপারে
ভেবে দেখবো ইনশাআল্লাহ। কিন্তু এতদিন
তুমি কেন বলোনি
রেবেকা তোমাকে দুষ্টু
কথা বলেছে?
জিশান হেসে বলল, মাকে স্কুল থেকে ফিরেই ফোন করে বলেছিলাম তো।
জাওয়াদ হেসে বলল, আচ্ছা তাহলে ঠিকআছে। এসব ব্যাপারে মা’র সাথে কথা বলাই ভালো। তবে তুমি চাইলে পাপার সাথে শেয়ার করতে পারো। যে কোন সময়, যে কোন কিছু।
জানি তো পাপা। কিন্তু ঐদিন তুমি ব্যস্ত ছিলে। তাই মাকে বলেছিলাম। মাকে বলেছি তাই আর তোমাকে বলিনি।
জিশানের চুল এলোমেলো করে দিয়ে জাওয়াদ বলল, ইট’স ওকে। আচ্ছা তুমি নতুন আর কি আবিষ্কার করা যায় সেই ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করো। পাপা ততক্ষণে ফ্রেশ হয়ে নেই।
জিশানের কাছ থেকে বেড়িয়ে বড় কটেজে রওনা দিলো জাওয়াদ। মিসেস সুরাইয়া আর আজাদ সাহেবের রুমের কাছে পৌঁছে দরজা নক করলো। আজাদ সাহেব দরজা খুলে জাওয়াদকে দেখে বেশ অবাক হলেও হাসি মুখে সালাম দিয়ে বললেন, ভেতরে এসো।
সালামের জবাব দিয়ে জাওয়াদ বলল, আমি নূহার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিলাম বাবা। তুমি ওকে ফোন দাও প্লিজ।
কোন কারণে যখনই
নূহার সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়, বাবা-মায়েদের কাউকে
সাথে নিয়েই ফোন করে জাওয়াদ। নিশ্চয়ই
জরুরি কোন কারণেই
কথা বলতে চাইছে
তাই প্রশ্ন না করে চুপচাপ নূহাকে
ফোন দিলেন আজাদ
সাহেব। সালাম বিনিময়ের
পর জাওয়াদ বলল, জারিফ নেই তো তোমার আশেপাশে?
অপর পাশ থেকে নূহা বলল, জ্বিনা। জারিফ ওর রুমে পড়ছে। কি হয়েছে?
জাওয়াদ বলল, গত সপ্তাহে জিশানকে ওর ক্লাসের একটি মেয়ে কিছু একটা বলেছিল। জিশান তোমাকে জানিয়েছিল। অথচ তুমি আমাকে জানাওনি। কেন?
জাওয়াদের কন্ঠের বিরক্তি স্পষ্ট টের পাচ্ছিলো নূহা। খুব সিম্পল কিছু ভেবেই জাওয়াদকে বলার প্রয়োজন বোধ করেনি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছে বলা উচিত ছিল। বাচ্চাদের প্রতিটা ব্যাপারেই খুব বেশি সিরিয়াস জাওয়াদ। ভুল যেহেতু করেছে কথাও শুনতেই হবে। শত কৈফিয়ৎ দিলেও যা বলার জাওয়াদ বলবেই। তাই কিছু না বলে চুপ করে রইলো নূহা।
আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরও যখন ওপাশ থেকে নূহার কোন কথা শুনতে পেলো না লাইন কেটে দিলো জাওয়াদ। রেগে গিয়েছে বুঝতে পেরে আজাদ সাহেব জাওয়াদের হাত ধরে বললেন, নূহা হয়তো বুঝতে পারেনি তোমাকে বিষয়টা জানানো উচিত ছিল।
এখানে বুঝতে না পারার কি আছে বাবা? আমি তো কখনোই ভুলে যাই না বাচ্চাদের সম্পর্কে ছোট্ট কোন একটা তথ্যও নূহাকে জানাতে। আমি সর্বদা সচেতন থাকি কোন ভাবেই যেন কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি না হয় আমাদের আর বাচ্চাদের মাঝে। তাহলে নূহা কেন বুঝতে পারবে না?
আজাদ সাহেব কিছু বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু তারআগেই জাওয়াদ থামিয়ে দিয়ে বলল, প্লিজ আমাকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করো না। বোঝাতেই যদি হয় তোমার মেয়েকে বোঝাও। কথা শেষ করেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো জাওয়াদ।
দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে বেশ অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন আজাদ সাহেব। এরপর নূহাকে ফোন করার উদ্দেশ্যে সেলফোনের দিকে হাত বাড়ালেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন