আমার সিদ্ধান্ত একটাই আমি ইসলামের পথে ফিরতে চাই। আমি একটি সুন্দর ও আলোকিত জীবন চাই নিজের জন্য। সুখে টইটুম্বুর না হোক কিন্তু স্বস্থি-শান্তি যেন থাকে জীবনে। বিবেকের দহন যেন না থাকে। রবের অসন্তোষের পথে চলছি এমন ভয় যেন সারাক্ষণ আচ্ছন্ন করে না রাখে মনকে। সেজন্য যদি আমাকে সবকিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তো বলেছেন, তার কোন বান্দা দ্বীনের পথে ফিরতে চাইলে, তার পথ তিনি সহজ করে দেন। আমার বিশ্বাস আমার রব আমাকে দূরে ঠেলে দিবেন না।
হাদিয়ার বলা কথাগুলো
ভালো লাগার সুবাস
ছড়িয়ে দিলো নূহার
মনে। যদিও কেস স্টাডি করেই বুঝেছিল
শরীয়তের ব্যাপারে যথেষ্ট
দৃঢ় হাদিয়া। ওর মনের এই দৃঢ়তাই
ওকে ভুল বুঝতে
পারার পর সংশোধনের
শক্তি যুগিয়েছে। কিন্তু
তারপরও কথা বলা শুরু করার পর থেকে প্রতিটা ব্যাপারেই হাদিয়ার ইতিবাচক
স্বীকারোক্তি খুব ভালো
লাগছিল নূহার। হাসি
মুখে বলল, কেস স্টাডি করতে গিয়ে
তোমার ভুলের উপলব্ধি
জাগ্রত হওয়া, সংশোধনের
ব্যাপারে দৃঢ়তা এবং সমঝদারি আমাকে মুগ্ধ
করেছে। তুমি মাশাআল্লাহ অনেক সচেতন
এবং বুদ্ধিমতি একটা
মেয়ে।
আমি জানি আপনি
আমাকে খুশি করার
জন্য এমনটা বলছেন।
সচেতন আর বুদ্ধিমতি হলে আমি কি এত বড় ভুল করতাম?
সচেতন, বুদ্ধিমান মানুষেরা
ভুল করেন না কখনোই একথা তোমাকে
কে বলেছে? সচেতনতা,
বুদ্ধিমত্তা এসব গুণাবলী
আমাদেরকে সঠিক পথে চলার, সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে
সহায়তা করে। কিন্তু
ভুল না করার
গ্যারান্টি প্রদান করে না। ভুল করাটা
মানুষের অন্য আর দশটা স্বভাবজাত গুনাবলীর
মতোই। সেজন্যই মানুষ
মাত্রই ভুল করে।
জগতে কেউই ভুলের
উর্দ্ধে নয়। ভুল করাটা তাই দোষেরও
নয়। তবে হ্যা
নিজের ভুল স্বীকার
না করা, ভুল জেনেও ভুলের পথে চলা অব্যহত রাখাটা
অবশ্যই দোষের। আবার
ভুল করার পর কেন আমার দ্বারা
এমন একটা ভুল হলো, এর পরিণতি
কি হবে ইত্যাদি
ভেবে দুর্বল বা হতাশ হয়ে যাওয়াটা
আরেকটা ভুল। কোন ভুল যখন আমাদের
দ্বারা হয়ে যায়।
তখন কেন সেটা
হয়েছে সেটা ভেবে
আফসোস করার চেয়ে,
কি করে ভুলটা
সংশোধন করা যায় সেই চেষ্টা করাটাই
উত্তম।
হাদিয়া বলল, আমি সত্যিই এই চেষ্টাটা
করতে চাই। সেজন্য
ধরেই নিয়েছি বিয়েটা
আমাকে ভেঙে দিতেই
হবে। কিন্তু সাথে
সাথে এটাও জানি
ওকে জীবন থেকে
সম্পূর্ণ আলাদা করতে
আমাকে নিজের সাথে
অনেক যুদ্ধ করতে
হবে। আমার ভাসমান
জীবনের অনেক বড় একটা সাপোর্ট ছিল।
বিশেষ করে আমার
মানসিক অবস্থা খুব ভাল বুঝতো। জীবনে
কারো সাথে অধিকার
খাটানোর সুযোগ হয়নি
আমার। কিন্তু ওর উপর অধিকার চাপিয়েছি। আমার অনেক
পাগলামি বিনা বাক্যে
সহ্য করেছে, মেনে
নিয়েছে এবং রাগ না করে উল্টো
আমাকে বুঝিয়েছে। আমি খুব ভাল একজন
বন্ধুও হারাবো। তবুও
আমি আমার জীবনের
এই অধ্যায়টির সমাপ্তি
টানতে চাই শুধুমাত্র আমার রবের
খুশির জন্য। এটাই
হয়তো এই এখন রবের পক্ষ থেকে
আমার জন্য সবচেয়ে
কঠিন পরীক্ষা। তবে আমি ডিটারমাইন্ড আমাকে এই পরীক্ষায়
পাস করতেই হবে ইনশাআল্লাহ। মূলত, সিদ্ধান্ত আমি মোটামুটি
নিয়ে ফেলেছি। কিন্তু
সমস্যা হচ্ছে বাস্তবায়ন করতে
পারছি না। আমি নিজেকে ওর কাছ থেকে বেশিক্ষণ দূরে
রাখতে পারছি না।
নূহা বলল, অনেক
বড় কিংবা বলা যায় একমাত্র আশ্রয়
ও প্রশান্তির জায়গা
ছিল তোমার জন্য।
এমন কারো কাছ থেকে স্বেচ্ছায় নিজেকে
দূরে সরিয়ে আনাটা
খুব বেশি কঠিন
হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তুমি
যেহেতু আন্তরিক ভাবে
চাইছো, প্রাথমিক পর্যায়ে
কষ্ট হলেও, একটা
সময় বেড়িয়ে আসতে
পারবে ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু সম্পর্কটা থেকে
বেরিয়ে আসার পর আমার কি হবে, এটা চিন্তা করে আরো দুর্বল হয়ে পড়ি। আমি আমার
পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম। কিভাবে পরিবারের
সদস্যদেরকে জানাবো? আম্মুকে
কিভাবে বলবো? সারাটা
জীবন আম্মু কষ্টই
পেয়ে গিয়েছেন। আমাদের
কাছ থেকে একটু
সুখ, একটু শান্তি
পাবেন আশা করেছিলেন। কিন্তু আমি তো আম্মুর সেই আশাও ভেঙে দিলাম।
যখন এই কথাটা
ভাবি আফসোস না করে পারিনা। দুর্বল
হয়ে পড়ি খুব বেশি। তখন মনেহয়
এই ভুলের সংশোধন
কখনোই সম্ভব নয়। এর থেকে আমি কোনদিন বের হতে পারবো না। আর যদি কোনভাবে সফল হয়েও যাই, চিরতরে
কি মুছে ফেলতে
পারবো জীবনের এই অধ্যায়কে? মানুষ যদি কোন ভাবে জেনে
ফেলে তখন তাদের
প্রশ্নের কি জবাব
দেবো আমি?
হাদিয়া তুমি হয়তো
জানো এই জগতে
তারাই কিছু করতে
পারে, করতে পেরেছেন যারা
মানুষের অ্যাকশন-রিঅ্যাকশন নিয়ে চিন্তিত
হয়নি। তুমি যত ভালো কাজই করো না কেন, একদল
মানুষ জুটেই যাবে
সমালোচনা করার জন্য।
আবার যত মন্দ
কাজই করো না কেন, তোমাকে সাপোর্ট
দেবার মতো মানুষও
পেয়ে যাবে। অর্থাৎ,
তোমার পথ ভালো
হোক বা মন্দ
সাপোর্টার এবং ক্রিটিক
হাজির হয়ে যাবেই
নিজ নিজ দায়িত্ব
পালনে। তাই মানুষের
চিন্তা একদম মনে জায়গা করতে দিয়ো
না। তুমি আল্লাহর
সন্তুষ্টির জন্য নিজ জীবনের ভালোবাসাকে ত্যাগ
করে দিতে চাইছো।
যখন লক্ষ্য রবের
সন্তোষ অর্জন, তখন মানুষের কথায় কি এসে যায়? এটা ঠিক যে, প্রথম
প্রথম তোমার খুব কষ্ট হবে মানুষের
নেতিবাচক কথা ও আচরণ সহ্য করতে।
কিন্তু খুব শিঘ্রীই
আয়ত্ত্ব করে ফেলবে
এড়িয়ে চলাটাকে। তাই আপাতত মানুষের চিন্তা
করো না। তবে চাইলেও পরিবারের চিন্তা
এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব
নয়। সেক্ষেত্রে আমার
পরামর্শ থাকবে, যেহেতু
পরিবারের কেউ জানে
না, সেহেতু এখনই
সবকিছু জানানোর দরকার
নেই। কিন্তু পরিবারের
যে কোন একজন
সদস্য। যাকে তোমার
কাছে বিশস্ত মনেহয়
এবং যে তোমাকে
কিছুটা হলেও বুঝবে
মনে করো এমন কারো কাছে সম্পূর্ণ
ঘটনা না বললেও,
অন্তত তোমার দ্বারা
বেশ বড় একটা
ভুল হয়ে গিয়েছে,
সেটা বলে রাখতে
পারো। এতে অন্তত
কখনো যদি এই ঘটনাটা পরিবারের সদস্যদের
কাছে কোন ভাবে
প্রকাশিত হয়ে যায়।
সে যাতে কিছুটা
হলে সাপোর্ট হিসেবে
কাজ করতে পারে।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে
তো আমার এমন কেউ নেই। তবে আম্মুকে হয়তো বলতে
পারবো। কিন্তু এত বড় একটা আঘাত
কিভাবে দেবো আমি আম্মুকে?
একটু ক্ষণ চুপ থেকে নূহা বলল, তাহলে তুমি তোমার
জীবনের এই অধ্যায়টাকে খুব ভালো
ভাবে গুছিয়ে লিখে
রাখো কোথাও। কিভাবে
বেড়ে ওঠার পরিবেশের
প্রভাব তোমাকে ধীরে
ধীরে ভুলের পথে ঠেলে দিয়েছে, কিভাবে
ভুলটা তোমার দ্বারা
ঘটেছে। অতঃপর ভুলের
উপলব্ধি জাগ্রত হওয়া,
সংশোধনের ইচ্ছে। সবকিছু
লিখে রাখো। এই ভুল থেকে বেরিয়ে
সঠিক একটা অবস্থানে
গিয়ে দাঁড়ানোর আগে কখনো যদি বিষয়টা
জানা জানি হয়ে যায়। এই লেখাটাই
হয়তো তোমার সাপোর্ট
হিসেবে কাজ করবে।
তবে এই মূহুর্তে
সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে
নিজের একটা মজবুত
অবস্থান তৈরি করা।
পার্টটাইম জবের পাশাপাশি
লেখাপড়া শুরু করো আবার। একাডেমিক পড়াশোনাই
করতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই।
বিভিন্ন ধরণের কোর্স
আছে সেগুলো করতে
পারো। নিজেকে যোগ্য
করে গড়ে তোলার
চেষ্টা করো। এতটা
যোগ্য যার সামনে
তোমার ভুল কখনোই
মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। তখন যদি পরিবারকে
তোমার জীবনের এই অধ্যায়ের কথা জানাতে
চাও, অবশ্যই জানাবে।
কিন্তু এই মূহুর্তে
না জানানোই ভালো।
তা না হলে সাপোর্ট দেবার বদলে,
তোমার চলার পথকে
আরো বেশি কন্টকাকীর্ণ করে তুলবে
সবাই মিলে।
আমিও এমন করেই
ভাবতে চেষ্টা করছিলাম।
যে পরিবার ও সমাজ আমাকে ভুলের
দিকে ঠেলে দিয়েছে,
তাদের কাছে ভুলের
কৈফিয়ত দিতে আমি মোটেও রাজী নই। কিন্তু এই মূহুর্তে
সম্পর্কটা থেকে কিভাবে
বের হবো সেটাই
বুঝতে পারছি না। গত এক সপ্তাহে
ওর সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ আমি করিনি। সেও নিজ যোগাযোগ করার চেষ্টা
করেনি। কারণ আমি ওকে স্ট্রিক্টলি বলেছিলাম যদি সত্যিকার
অর্থে মুসলিম না হয়, তাহলে যেন আর কন্টাক্ট না করে। আমি চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নিয়েছি যদি মুসলিম না হয়, তাহলে ওকে আমি আমার জীবনে চাইনা।
সিদ্ধান্তে আমি স্টিক্ট
আছি এবং থাকবো
ইনশাআল্লাহ। আমার উপলব্ধি
জাগ্রত হবার পর কোনভাবেই ইসলামের সাথে
কম্প্রোমাইজ করার কথা চিন্তাও করতে পারিনা।
আমার মোড়াল ভ্যালুজ,
রিমিটস, রিলেজন অন্য
আর সবকিছুর উর্দ্ধে।
কিন্তু তবুও বার বার দুর্বল হয়ে পড়ি। খুব মনে পড়ে ওর কথা।
আবার কখনো মনেহয়
যে, এমনো তো হতে পারে একটা
সময় ধীরে ধীরে
বদলে যাবে। তখন আদর্শ একজন মুসলিম
হয়ে যাবে। কিন্তু
এখন যদি আমি ওর সাথে সম্পর্ক
শেষ করে দেই, তাহলে তো সেই সম্ভাবনাটা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। এরজন্য
আবার আমাকে দায়ী
হতে হবে নাতো
আল্লাহর কাছে?
নূহা হাসি মুখে
বলল, এভাবে চিন্তা
করতে গেলে তো অসংখ্য সম্ভাবনার দ্বার
খুলে যাবে। এবং তোমার সংশোধনের পথে চলাটা জটিল করে দেবে। তবে তোমার
মনে এমন চিন্তা
আসাটাও ঠিকআছে। এবং এই পয়েন্টটা আসলে
তোমার সিদ্ধান্ত অটল থাকার খুব শক্ত
একটা খুঁটি। একজন
সাইকিয়াটিস্ট হিসেবে যদি পরামর্শ চাও, তাহলে
বলতে পারি যে, যদি মনে করো তোমার প্রচন্ড ভালোবাসা
আছে মানুষটাকে ঘিরে।
এবং তোমার প্রতিও
তার অফুরন্ত ভালোবাসা
আছে। যে ভালোবাসা
তাকে প্রেরণা যোগাবে
মনে প্রাণে ইসলামের পথে আসার। তাহলে এটাকে
চ্যালেঞ্জ হিসেবে ট্রাই
করে দেখতে পারো।
কিন্তু চ্যালেঞ্জ হিসেবে
নিতে চাইলে অনেক
অনেক সাধনা করতে
হবে তোমাকে। একজন
উত্তম স্ত্রীর ভূমিকা
পালন করতে হবে।
ভালোবাসা দিয়ে জয় করে নেয়া যাকে
বলে। এটা অনেক
কঠিন এক পরীক্ষা।
তোমাদের বিয়ের বৈধতাটা
প্রশ্নোবোধক বলেই এই ব্যাপারে আমি কোন সিদ্ধান্ত তোমাকে দেবো
না। তোমার যদি শরীয়তের জ্ঞান না থাকতো, তাহলে আমি হয়তো কয়েকটা অপশন
সেট করে দিতাম।
কিন্তু যতটুকুন জ্ঞান
তোমার আছে তাতে
সিদ্ধান্ত নেবার যোগ্যতাও
তোমার আছে। এই ব্যাপারে কি করবে
সেটা তাই একান্তই
তোমার সিদ্ধান্ত। তুমি
সিদ্ধান্ত নেবার পর আমি তোমাকে যথাযথ
সাহায্য করবো সেটা
কন্টিনিউ করতে। তবে এখন এই মূহুর্তেই সিদ্ধান্ত নিতে
হবে তোমাকে এমনটা
কিন্তু মোটেও নয়। আরেকটু সময় নাও ভেবে দেখার। তুমি
অনেকটা পথ চলেছো
তার সাথে। খুব ভালো ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখো
তোমাদের সম্পর্কের মধ্যে
বিশ্বাস ও ভালোবাসার অবস্থান কতটুকুন?
একে অন্যের প্রতি
মানসিক ও আত্মিক
আকর্ষণের মাত্রা কতটা
তীব্র? ফিজিক্যাল অ্যাট্রাকশন থাকবেই। এই ধরণের ভালোবাসার প্রকাশগুলোকে তাই বিবেচনার
বাইরে রেখে চিন্তা
করতে হবে তোমাকে।
যদি পজেটিভ মনেহয়
তাহলে আমার করণীয়
কেমন হওয়া উচিত
হবে?
সেক্ষেত্রে নিজেদের জীবনটাকে
সুখী ও সুন্দর
করার পথে প্রতিবন্ধকতা গুলো খুঁজে
বের করে দুজন
মিলে আলোচনা করতে
হবে। রাগ না করে, ধৈর্য্য ধরে, শান্ত ভাবে একে অন্যেকে সময় দিতে
হবে। কোন সম্পর্কের মধ্যে পবিত্র
ভালোবাসা বিদ্যমান থাকলে,
সেই ভালোবাসার শক্তি
দিয়ে অনেক কঠিন
কাজও খুব সহজেই
করে ফেলা সম্ভব
হয়। মূল কথাটা
কি জানো? আল্লাহর
হেদায়াত ছাড়া সঠিক
পথে ফিরে আসাটা
সম্ভব নয় কারো
পক্ষেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা
তোমাকে হয়তো একটা
সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর
পথে প্রতিবন্ধকতা সমূহ তোমাকেই দূর করতে হবে। তাই খুব ভেবে চিন্তে
এরপর সিদ্ধান্ত নাও।
আগামীকাল বিকেলে আমরা
আবার কথা বলবো
ইনশাআল্লাহ। আরো কিছুক্ষণ
হাদিয়ার সাথে কথা বলে মুনাকে নিয়ে
বাইরে বেরিয়ে এলো নূহা।
কিছুক্ষণ নীরবে পথ চলার পর মুনা
বলল, সংশোধনের পথে পরিবার ও সমাজের
নেতিবাচক প্রভাব মনের
জোরকে ভয়ঙ্কর ভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত করে আপি।
আমি বেশ কয়েকটা
কেসে এই সমস্যাটা
দেখেছি।
নূহা বলল, ছোটবেলায়
ভাইয়া বলেছিলেন, “অতীত
হচ্ছে সেই ছায়া
যেটা সবসময় তোমার
সামনে সামনে চলবে।
আর মানুষ সেই ছায়ায় মাঝে তোমার
অবয়ব দেখতে চেষ্টা
করবে। তাই বর্তমান
প্রতিটি কদম সতর্কতার সাথে
ফেলো। কেননা চলার
পথে তোমার পদচিহ্নরা রয়ে যাবে।”
বেশ কিছুদিন আগে বেদনাক্ত হৃদয়ে এক স্টুডেন্ট আক্ষেপ করে বলছিলো, তার ভালো
হবার পথে সবচেয়ে
বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার অতীত।
কেননা আশেপাশের প্রায়
সবাই বেশির ভাগ সময় অতীতের আয়নায়
তার প্রতিচ্ছবি দেখে। সম্মুখের আলোর
হাতছানি স্বর্ত্বেও তাই বার বার তাকে
পেছনের অন্ধকারের পানে
ফিরে তাকাতে হচ্ছে।
পেছনে ফিরে তাকানো
যায় কিন্তু পেছনে
অন্ধকারের বুকে আলোর
মশাল জ্বালানো সম্ভব
নয় কারো পক্ষেই।
তবে আলোর মর্ম
অনুধাবন করে সেই পথে চলা মোটেই
অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু পেছনের অন্ধকার
ছায়ায় কারণে যদি কারো সামনের চলার
পথ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় সেই পরিস্থিতিতে অসহায়ত্ব ঘিরে
ধরাটাই স্বাভাবিক। অতীত
মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটাকে
মুছে ফেলা সম্ভব
নয় এটা যেমন
সত্যি। তেমনি কাউকে
তার অতীত দিয়ে
বিবেচনা করা ঠিক নয় এটাও সত্যি।
বিশেষ করা যারা নিজেদেরকে সংশোধন করার
চেষ্টা করছে তাদেরকে।
এতে তাদের ভালোর
পথে চলা বাঁধাগ্রস্ত হয় ভীষণ
রকম।
কিন্তু খুব কম মানুষই এটা বোঝে
আপি। তার উপর যদি ভুলটা হয় ভালোবাসা কেন্দ্রীক, তাহলে
তো কথাই নেই।
অথচ কেউ তো কাউকে ইচ্ছে করে ভালোবাসে না। মনের
মধ্যে কারো প্রতি
ভালোবাসা জন্ম হয়ে গেলে ব্যক্তির কি দোষ?
নূহা হেসে বলল, ব্যক্তির দোষ হচ্ছে,
সঠিক-বেঠিক, বৈধ-অবৈধ বিবেচনা না করে ভালো লাগাকে
প্রশয় দিয়ে ভালোবাসাতে রূপান্তরিত করা।
মুনা লাভ ইন ফার্স্ট সাইট বলে যে কথাটা প্রচলিত
আছে, তারমধ্যে ইনফমেশন
গ্যাপ বিদ্যমান। প্রথম
দেখাতে কারো প্রতি
ভালো লাগা জন্মাতে
পারে, কিন্তু ভালোবাসা
কখনোই নয়। কারো
প্রতি ভালো লাগার
রাশ যখন টেনে
ধরা না হয়। সেটা বাড়তে বাড়তে
ভালোবাসার সীমানায় পৌঁছে
যায়। কিন্তু শুরুতেই
কখনো ভালোবাসা তৈরি
হয় না। ভালোবাসা
কোন বাহ্যিক আবেগ
নয়। ভালোবাসা একটি
আত্মিক বন্ধন। কোন সম্পর্কের মধ্যে যার জন্ম হবার জন্য
মানসিক ও আত্মিক
যোগাযোগ অত্যাবশক। আর ব্যক্তির দোষ এখানটাতেই। ভালো লাগাকে
ভালোবাসা ভেবে নেয়াটা।
সময় মতো এই পার্থক্য নির্ধারণ করতে
পারাটা ভুল পরিণতির
প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে।
মুনাকে চুপ হয়ে যেতে দেখে নূহা
হেসে বলল, মাস খানেক
আগে আমার এক কলিগের ভাতিজী বিয়ে
ভেঙে যাবার কারণে
সুইসাইড করার চেষ্টা
করেছিলো। ছেলেটির সম্পর্কে
খুবই নেতিবাচক কিছু
তথ্য জানার পর মেয়ের বাবা-মা বিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েটি
কিছুতেই এটা মেনে
নিতে না পেরে
সুইসাইডের পথ বেছে
নিয়েছিল। শারীরিক ভাবে
বেশ ভালো থাকলেও
মানসিক অবস্থা এখনো
খুবই নাজুক মেয়েটির।
ওকে সাহায্য করা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ ধীরে
ধীরে বেড়িয়ে আসতে
পারবে মনের এই দুর্বল অবস্থা থেকে।
কিন্তু গত সপ্তাহেও
যখন কথা বলতে
গিয়েছিলাম তখনো মেয়েটা
অঝর কাঁদছিল আর বলছিল, কিভাবে নিজের
জীবনকে সাজাবে ঐ ছেলেটিকে ছাড়া! ছেলেটিকে
ছাড়া কিছুই কল্পনা
করতে পারে না, অনেক ভালোবাসে ইত্যাদি
ইত্যাদি। আসলে কখনো
কখনো আমরা একজন
মানুষকে এত বেশি
ভালোবাসি যে তাকে
ঘিরেই জীবনের সব হাসি-আনন্দকে সাজিয়ে
ফেলি। তাকেই জীবনের
সব সুখের কারণ
মনে করি। কোন কারণে সে মানুষটা
আমাদের জীবন থেকে
সরে গেলে বা হারিয়ে গেলে নিজেদেরকে দুঃখের চাদরে
জড়িয়ে নেই আমরা।
কারণ এই ধরণের
ভালোবাসা আমাদের ভুলিয়ে
দেয় ঐ একজনকে
ছাড়াও আমাদের জীবনে
এমন অনেক মানুষ
আছেন যাদের কাছে
আমাদের গুরুত্ব অনেক।
আমাদের বেদনা যাদেরকেও
করে তোলে ব্যথাতুর। আমাদের মুখের
একটু হাসি যাদের
চোখে নিয়ে আসে আনন্দাশ্রু। জীবনের একটি
ভালোবাসাকে হারিয়ে আমরা
নিজেদেরকে এতটাই দুর্ভাগা
ভাবি যে, আমাদেরকে
ঘিরে থাকা আশির্বাদ
রূপী ভালোবাসাগুলোকে দেখতেই পাই না। তাই যখন কোন একজন ব্যক্তির কারণে
জীবনকে অর্থহীন মনেহয়।
তখন সেই মানুষগুলোর স্মরণ জাগিয়ে
যেতে পারে সুখানুভূতি। যাদের ভালোবাসা
মিশে থাকে অস্তিত্ব
জুড়ে। শুধু একটু
ইচ্ছা আর চেষ্টাই
যথেষ্ট সেই ভালোবাসাগুলোকে উপলব্ধি করার
জন্য।
কিন্তু হাদিয়ার তো এমন কেউ নেই আপি। ভালোবাসার মানুষটিকে নিজ ইচ্ছেয়
জীবন থেকে সরিয়ে
দিয়ে কাকে আঁকড়ে
সামনে পথ চলার
চেষ্টা করবে?
হাদিয়ার বর্তমান উপলব্ধি
যেমন ওর অতীত
ভুলকে শুধরে দেবে
না। বরং, নিজেকেই
সংশোধনের চেষ্টা করতে
হবে হাদিয়াকে। ঠিক তেমনি ভবিষ্যতে পথচলার
সাথী হিসেবে কাউকে
পাবে কি পাবে
না, সেই চিন্তাটাও অর্থহীন। তবে আলোকিত পথে চলতে
চলতে কোন না কোন আলোর সন্ধানীর
সাথে দেখা হয়ে যাবে জীবনের কোন এক মোড়ে, এই আশাটা
অন্তত থাকবে ওর মনে। আর বর্তমানের এই কঠিন
সময়টা যাতে একা একা মোকাবিলা করতে
না হয় হাদিয়াকে,
সেজন্য তো আলহামদুলিল্লাহ আমরা সবাই
আছিই ওর সাথে।
তাই না?
মুনা হেসে বলল, জ্বি আপি। রিহ্যাভ
সেন্টারে জয়েন করার
পর থেকে তোমাদের
সমস্ত মিটিংয়ের রেকর্ড
শুনেছি আমি। বিশেষ
করে তোমার ক্লাসের
রেকর্ড গুলো। তোমার
কথাদের আমার হিপনোটিক
সাজেশন মনেহয়। আমি সবসময় চেষ্টা করি তোমার মতো করে চিন্তা করতে, কথা বলতে। কিন্তু কেন জানি পারিনা। সেজন্য
সিদ্ধান্ত নিয়েছি হিপনোটিজমের উপর স্পেশাল
কোর্স করবো।
নূহা হাসতে হাসতে
বলল, সাইকোলজির সম্পর্কে
যখন তেমন কোন ধারণা ছিল না। সাইকোলজি নিয়ে স্টাডি
করার কোন ইচ্ছা
বা আগ্রহও ছিল না মনে। তখনো
যেই জিনিসটা শিখতে
চাইতাম সেটি হচ্ছে,
হিপনোটিজম। অবশ্য এখন জানি শুধু আমার
কাছেই না বেশির
ভাগ মানুষের কাছেই
সাইকোলজির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং এবং রোমাঞ্চকর বিষয় হচ্ছে
হিপনোটিজম। আমি যেমন
হিপনোটিজম শেখায় জন্য
অস্থির ছিলাম একসময়।
তেমন অস্থিরতা এখন অনেকের মাঝেই দেখতে
পাই। আসলে হিপনোটাইজ করে কাউকে
নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করাবো এই ভাবনাটির মাঝে অনেক
আনন্দ আছে। অন্যের
নিয়ন্ত্রণ হাতে পাওয়ার
রোমাঞ্চটাই আসলে অন্যরকম।
কিন্তু যেদিন হিপনোটিজম সম্পর্কে জানার
সুযোগ হয়েছিল মনের
সব ফ্যান্টাসি দূরীভূত
হয়ে গিয়েছিল। বুঝেছিলাম হিপনোটিজনকে ঘিরে আমার কল্পনা
আর মেডিকেল সাইন্সের
ব্যাখ্যা একদমই ভিন্ন।
হিপনোটিজম পরশ পাথর
বা জাদুর সোনার
কাঠি, রুপার কাঠি
নয়। আবার এটা আধ্যাত্মিক কিংবা অতিবাস্তব কিছুও নয়। হিপনোটিজম এমন একটা
মানসিক অবস্থা যা আপাত দৃষ্টিতে অচেতন
বা তন্দ্রাচ্ছন্ন মনে হলেও বিষয়টা
ঠিক তার উল্টো।
এই সময় ব্যক্তির
মনোযোগ বরং স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে
অনেক বেশি ফোকাসড
থাকে। হিপনোটিজ দ্বারা
অন্যেকে নিয়ন্ত্রণ করার
কথা জানা ছিল।
কিন্তু একটা সময় জেনেছিলাম এর দ্বারা
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার
পদ্ধতি। জেনেছিলাম হিপনোসিসের দ্বারা কিভাবে
নিজের মনের সুপ্ত
ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, ভালোলাগা ইত্যাদিতে বের করে আনা যায়। কিভাবে
নিজ মনের অন্যায়
চাওয়ার বিরুদ্ধে, প্রবৃত্তির মায়াজালের বিরুদ্ধে
মোকাবিলা করা যায়।
কিভাবে নিজের সাথে
নিজে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়া যায়।
তাহলে আমাকে শিখিয়ে
দাও আপি প্লীজ।
কিছু ব্যাপারে নিজের
সাথে যুদ্ধ করে করে আমি সত্যিই
ক্লান্ত।
আসলে নানান রকম দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ভরা আমাদের মনটাকে যুদ্ধক্ষেত্রের সাথে তুলনা
করলে মোটেই ভুল হবে না। আবেগের
সাথে বিবেকের চিরন্তন
দ্বন্দ্ব তো অব্যহত
ভাবে চলতেই থাকে
নিরন্তন! মনের চাওয়ার
সাথে পাওয়ার হেরফেরকে
ঘিরে আক্ষেপের দ্বন্দ্বযুদ্ধ! কল্পনার স্বপ্নীল
ভুবনের সাথে কঠিন
বাস্তবতার বোঝাপড়ার যুদ্ধ!
স্বার্থ আর নিঃস্বার্থের নিদারুন দরকষাকষি
ছাড়াও আরো কত কি দ্বন্দ্ব, কত শত যুদ্ধ। মানুষকে
আসলে জীবনে চলার
পথে সর্বক্ষণই নানারকম
যুদ্ধ করতে হয়। নিজ অবস্থা-অবস্থান,
বাস্তবতা-প্রতিকূলতা, পরিবেশ-পরিস্থিতি, আপনজন-কাছের
কারো সাথে কখনো
বা দূরেও কেউ হাজির হয় দ্বন্দ্ব
যুদ্ধে। কিন্তু মানুষের
সবচেয়ে বড় যুদ্ধ
তার নিজের সাথেই।জীবনের সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব আত্মদ্বন্দ্ব। এটা ভুলে যাই বলেই চারপাশের সবকিছুকে
মোকাবিলা করতে গিয়ে,
সবাইকে পরাজিত করতে
গিয়ে নিজের মনের
বিরুদ্ধেই লড়তেই ভুলে
যাই আমরা। যারফলে
অনেকের সাথে জিতে
এসে, অনেক বিরূপ
পরিস্থিতিকে হারিয়ে এসেও
বিজয়ীর মুকুট মাথায়
পড়তে পারে না। এর কারণ নিজেকে,
নিজের প্রবৃত্তিকে সে পরাজিত করতে
পারেনি। অন্যেকে সান্ত্বনার বাণী শোনানো
আসলে খুবই সহজ।
অন্যেকে পথ দেখানোও
তেমন কঠিন না। কিন্তু পরিবেশ, পরিস্থিতি বা অন্য
কোন কারণে নিজে
যখন ধৈর্য্য হারিয়ে
ফেলি, হতাশা ঘিরে
ধরে মনকে তখন নিজেকে আশার বাণী
শোনাতে পারাটাই হচ্ছে
সবচেয়ে বড় বিজয়ের
একটি। এমনটা প্রায়ই
হয় মনের আয়নার
নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতেও
ভয় পাই আমরা।
দাঁড়াতে পারি না নিজের সামনে। সমস্যা
থেকে বেরোনোর জন্য
চোরা গলির সন্ধান
করি। কল্পনা ও বাস্তবতাকে গুলিয়ে ফেলি।
নিজের সাথেই তখন শুরু হয় লুকোচুরি
খেলা। লুকোচুরি খেলতে
গিয়ে কখনো কখনো
এমন ভাবে লুকোই
যে নিজের কাছেই
হয়ে যাই অচেনা।
তৈরি হয়ে যায় মুখ ও মুখোশের
অন্তঃরাল।
এমন ক্ষেত্রে করণীয়
কি আপি? কিভাবে
নিজেকে রক্ষা করা যায় এমন পরিস্থিতির হাত থেকে?
কিভাবে নিজের দুই সত্ত্বার মাঝে সংযোগ
স্থাপন করা যায়? কিভাবে নিঃসঙ্কোচে তাকানো
যায় নিজের দিকে?
কিভাবে দাগ টেনে
আলাদা করে দেয়া
যায় কল্পনা ও বাস্তবতাকে? কিভাবে লুকোচুরি
খেলা বন্ধ করা সম্ভব নিজের সাথে?
কিভাবে প্রতিহত করবো
নিজের কাছ থেকে
নিজের হারিয়ে যাওয়াকে?
তোমার সব সব প্রশ্নের একটাই জবাব
মুনা। সেটা হচ্ছে
অবস্থা বা অবস্থান
যাই হোক না কেন। আমাদেরকে সবসময়
সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে
হবে। তাহলেই কেবল
মিটে যাওয়া সম্ভব
এই সমস্ত দ্বন্দ্বের। তবে এরজন্য
সবচেয়ে আগে প্রয়োজন
নিজেকে জানা। মনের
এক কোনে তাই একটি ল্যাবরেটরি নির্মাণ
করতে হবে সর্বপ্রথম। নিজেকে নিয়ে
সেখানে গবেষণা, পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ অতঃপর
নিজেকেই উদ্ভাবন।
মূনা হেসে বলল, তাহলে আমাকে শিখিয়ে
দাও কিভাবে মনের
কোনে ল্যাবরেটরি নির্মাণ
করতে হয়।
নূহাও হেসে বলল, ইনশাআল্লাহ অবশ্যই শিখিয়ে
দেবো। কিন্তু এখন আমাকে ছুটতে হবে আমার কন্যা আর পুত্রদের কাছে। সকাল
থেকে এক মূহুর্ত
সময়ও কাটাতে পারিনি
ওদের সাথে। চারজনই
গাল ফুলিয়ে বসে আছে শুনেছি। বিকেল
আর সন্ধ্যাটা পরিবারের
সাথেই কাটাতে চাইছি।
ইনশাআল্লাহ রাতে কথা বলবো তোমার সাথে।
আরো একটু ক্ষণ
কথা বলে মুনাকে
বিদায় জানিয়ে অভিমানী
কন্যা আর পুত্রদের
সন্ধানে ছুটলো নূহা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন