রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৬

আমাদের আনন্দবাড়ি...১৪




ডিনার সেরে বাচ্চাদের চারজনকে সাথে নিয়ে বাগানে এসে বসলো জাওয়াদ। জারিফ আনন্দিত কন্ঠে ঘোষণা দিলো সে আরো চারটা নতুন সূরা মুখস্ত করেছে। জাওয়াদ জারিফকে আদর করে হেসে বলল, মাশাআল্লাহ। তাহলে সবার আগে এখন আমরা জারিফের তিলাওয়াত শুনবো। জারিফ তখন এক এক করে সূরা নাবা, নাযি’য়াত, আবাসা এবং তাকভীর তিলাওয়াত করে শোনালো। জারিফের তিলাওয়াত শুনতে শুনতে আঠারো বছর পেছনে চলে গিয়েছিল জাওয়াদ। মেডিকেল ট্যুরে প্যারিস গিয়েছিল। রামাদান মাস ছিল তখন। তারাবীহ নামাজ আদায় করার জন্য পাশে বাংলাদেশী মসজিদে গিয়েছিল। ইমাম সাহেবের অসাধারণ হৃদয়স্পর্শী তিলাওয়াত শুনে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিল নামাজ শেষ হবার পর পরিচিত হতে গিয়েছিল জাওয়াদ। ভরাট কন্ঠের শ্রুতিমধুর তিলাওয়াত শুনে ভেবেছিল মোটামুটি মাঝ বয়সি কেউ হবেন। কিন্তু চব্বিশ-পঁচিশ বছর বয়সি একটি ছেলেকে ইমামের স্থানে সামনে পেয়ে বেশ অবাক হয়েছিল। রাহাতের সাথে সেটাই প্রথম সাক্ষাৎ ছিল জাওয়াদের। পরিচিত হবার পর কথায় কথায় নিজের সম্পর্কে সেদিন অনেক কিছুই বলেছিল রাহাত। অনেক বড় পরিবার তাদের কিন্তু বাবা-মা মারা গিয়েছেন ছোটবেলাতেই। ভাইদের কাছেই বড় হয়েছে। পরিবারের সবার ছোট তাই বেশ আদরেরও সবার কাছে। হিফজ কমপ্লিট করার পর আবার জেনারেল লাইনে পড়াশোনা শুরু করেছিল। কিন্তু অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার পরপরই সুন্দর জীবনের হাতছানিতে সাড়া দিয়ে স্বপ্নের ইউরোপে আগমন। এবং যথারীতি বেশির ভাগ মানুষের মতোই সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল মাস ছয় যেতে না যেতেই। শুধু রামাদান উপলক্ষ্যে তারাবীহর নামাজ পড়ানোর উদ্দেশ্যে মসজিদ কমিউনিটি এক মাসের জন্য ইমামের দায়িত্ব দিয়েছিল রাহাতকে। রামাদান শেষ হলেই আবারো ফিরে যেতে হবে বেকার জীবনে। পরিবার, বাবা-মাকে ছাড়া নিজের জীবন কল্পনাও করতে পারে না জাওয়াদ। তাই যখনই শোনে ছোটবেলায় কেউ বাবা-মাকে হারিয়েছে অদ্ভুত একরকম মায়া অনুভব করে তার প্রতি। এছাড়া রাহাতের সুমধুর তিলাওয়াত, ভদ্র ও মার্জিত ব্যবহার সবকিছু মিলিয়ে খুব পছন্দ হয়েছিল জাওয়াদের। তাই নিজের কার্ড, ফোন নাম্বার, ঠিকানা সবকিছু দিয়ে এসেছিল রাহাতকে। যদি প্রয়োজন মনেকরে নিশ্চিন্তে যেন যোগাযোগ করে সেই আশ্বাসও দিয়ে এসেছিল। ঈদের সপ্তাহ খানেক পরই রাহাত হাজির হয়ে গিয়েছিল। নিজেদের ব্যক্তিগত ইসলামী সংগঠন গড়ে তোলার কাজ মাত্র তখন শুরু করেছিল জাওয়াদ, আদী, ফায়েজ এবং তাদের কয়েকজন বন্ধু মিলে। নিজ থেকেই সবাইকে সহীহ করে কুরআন পড়তে শেখানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল রাহাত। পাশাপাশি নিজেদের রেস্টুরেন্টে পার্টটাইম জব এবং স্টাডি শুরু করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল জাওয়াদ রাহাতের জন্য। প্রচন্ড রকম পরিশ্রমী ও কর্মঠ ছেলে রাহাত। নিজের কাজে তো কখনো অবহেলা করতোই না উল্টো সময় পেলেই অন্যদের কাজে সহায়তা করতো। শরীয়তের বিধি-নিষেধের ব্যাপারেও খুব সতর্ক ছিল। নিজ গুণে তাই সবার মনে জায়গা করে নিতে খুব বেশি দিন লাগেনি রাহাতের। সংগঠনের কার্যালয় হিসেবে যে বাড়িটা নিয়েছিল জাওয়াদ সেখানেই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল রাহাতকে। মাঝে মধ্যে যখন কোন কারণে রাতে ওখানে থেকেছে ফজরের পরে রাহাতের তিলাওয়াত শুনতে কখনোই মিস করেনি। এই মূহুর্তে জারিফের কন্ঠের তিলাওয়াত বলে দিচ্ছিলো বাবার শুধু আকর্ষণীয় চেহারাটাই দখল করেনি জারিফ, সাথে সুমধুর কন্ঠটাও পেয়েছে পৈত্রিক সূত্রে।        

আরো কিছুক্ষন বাচ্চাদের সাথে জেনারেল নলেজ, কুইজ ইত্যাদি খেলার পর বেশ রাত হয়ে গিয়েছে বলে সবাইকে ঘুমোতে নিয়ে গেলো জাওয়াদ। কিন্তু বিছানাতে শুয়েই জারিফ গল্প শোনার বায়না ধরলো। নিজ থেকেই ছোটভাইকে গল্প শোনানোর দায়িত্ব নিলো নাবিহা। জাওয়াদও পাশে বসে গেলো গল্প শোনার জন্য। একই দিনে আরেকটা জিনিস আবিষ্কার করলো জাওয়াদ। নাবিহা গল্প বলার এবং বোঝানোর স্টাইল একদম নূহার মতো। ছোট্ট একটা বাচ্চা ছেলের আত্মকথন মূলক গল্পটা জারিফকে এত চমৎকার ভাবে বিশ্লেষণ করে শোনাচ্ছিল নাবিহা, জাওয়াদ অবাক চোখে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল মেয়ের দিকে। মনেই হচ্ছিলো না নাবিহা নিজেও যে ছোট্ট একটা মানুষ। গল্পটিও অসাধারণ ছিল। একটা ছোট্ট বাচ্চা নিজের মনে অক্লান্ত ভাবে কত রকমের কল্পনার জাল যে বুনে চলে সেটাই ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন গল্পকার। গল্পে বাচ্চাটার নিজস্ব একটা আকাশ আছে, একটা সমুদ্র আছে, একটা পাহাড় আছে, পাহাড়ে চড়ার লম্বা একটা সিঁড়ি আছে। আর এসবের সাথে নাবিহার শিশুসুলভ কথোপকথনের ছড়াছড়ি মিলে অসাধারণ একটা গল্প তৈরি হয়েছিল । গল্প শেষ হবার পর সবাইকে শুইয়ে দিয়ে রুমের আলো কমিয়ে দিয়ে আবারো বাগানে এসে বসলো জাওয়াদ। কেন জানি গল্পের কথাগুলোই মনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিলো। আসলে সবার মনেই প্রকৃতি আছে, আছে প্রকৃতির প্রতিটি রঙ-রূপ-বৈচিত্রতা। তবে  সেগুলোর অস্তিত্বকে অনুধাবন করতে হলে সবার আগে মনের বন্ধ জানালার কপাটটিকে খুলতে হয়।      

আকাশের দিকে তাকালো জাওয়াদ। পূর্ণিমার চাঁদকে ঘিরে থোকা থোকা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। আকাশের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর একটা সময় উপলব্ধি করলো তার মনের মাঝেও একটুকরো আকাশ আছে। তাতেও হয় সুর্যাস্ত, হয় সুর্যোদয়, ভেসে বেড়ায় থোকা থোকা মেঘ, ঝরে  ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, কখনো বাঁধ ভাঙ্গে জোছনা, চমকে ওঠে বিজলী, আবার কখনো খসে পরে দু’একটা তারা! জাওয়াদের হঠাৎ মনেহলো কোন কারণ ছাড়াই এক এক করে খুলে যাচ্ছে মনের জানালার কপাটগুলো। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলো মনের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা সুউচ্চ হিমালয়কে, যাকে জয় করার জন্য আছে প্রলম্ব সিঁড়ি। আছে স্বপ্নপুরী, বিষাদের কারাগার, ফুলের বাগান, শান্ত দীঘি, আছে খাঁদা-খন্দ, ঘৃণার জাল, নিরাশার গলি-ঘুপচি, মিথ্যার চোরাবালি! খুলে গেলো হঠাৎ আরেকটি জানালা। দেখতে পেলো গল্পের সেই শিশুটির মতো তারও একটা নিজস্ব সমুদ্র আছে, আছে বাঁকা চাঁদের মতো রুপালি সৈকত। তাতে আছড়ে পড়ে হীরকের ফোয়ারা ছোটাচ্ছে নীলচে সাদা ঢেউরাশি। নীলাকাশ ছায়া ফেলে যার পানিকেও করে তুলেছে একই রকমের নীল। সৈকতের কিনার জুড়ে আছে সারি সারি নারকেল আর পাম গাছ। চারিদিকে অর্কিড, জেসমিন, বুগেনভিলা, কার্নেশান আর ফরগিভ মি নট ফুলের ছড়াছড়ি। বাতাসে ঝিঁঝিঁ পোকার গুঞ্জন আর পাখীদের কিচির মিচির। আর সমুদ্রের গভীরে আছে হাঙ্গর রূপি হতাশা, নীল তিমির মতো উচ্চাশা, লন্ঠন মাছের মতো টিমটিম জ্বলতে থাকা আশা, রংবেরঙের প্রবালের মতো স্বপ্ন! প্রশ্ন জাগলো, আচ্ছা মনের মাঝে মহাকাশ কি আছে? নিশ্চয়ই আছে নয়তো মাঝে মাঝে এতো শূন্যতা, এতো হাহাকার ঘিরে ধরে কেন মনকে? কেমন যেন একটা দমবন্ধ করা পরিস্থিতি, সব থাকতেও কিছুই নেই এমন এক অনুভূতি! মধ্যাকর্ষন বলের অভাবে মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বপ্ন-ভালোবাসা যেখানে ভাসতে থাকে চোখের সামনে কিন্তু তাদেরকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। মনকে জাপটে ধরে একরাশ নিকষ কালো বরফ শীতল শূন্যতা।

চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে দু’চোখ বন্ধ করলো। চারপাশের পরিবেশ, মনের নাজুক অবস্থা, ভাবনাদের অকারণ গুঞ্জরন সবকিছু মিলিয়ে অন্য কোন ভুবনে হারিয়ে ফেললো জাওয়াদ নিজেকে। যেখানে বাতাসে মেহেদীর কড়া সুবাস ভেসে এসে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল তার পাশে। চোখ বন্ধ করে রাতের প্রকৃতির জুড়ে যে শব্দের মেলা বসে সেসব উপভোগ করছিলো। কিন্তু মেহেদীর জমাট কড়া ঘ্রাণের সাথে কাঁচের চুড়ির রিমঝিম ধ্বনি যোগ হলে চোখ খুলতে বাধ্য হলো সে। মানুষের মন বহুমুখী গুণে গুণান্বিত। তারমধ্যে একটি হচ্ছে মন সুন্দর মুহুর্তগুলোকে নিজের মধ্যে ধারণ করে ফেলতে পারে। অতঃপর যতনে মনের এ্যালবামে সেই মুহুর্তটিকে সাজিয়ে রাখে। ঠিক তেমন একটি মুহুর্ত মনে হলো জাওয়াদের এই মুহুর্তটিকে। এমন মূহুর্তগুলোকে মন শুধু ফ্রেমে বন্দী করেই ক্ষান্ত হয় না। কখনোই যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য সতর্কতা স্বরূপ লেমিনেটিংও করে নেয়।

কখন থেকে চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তুমি চা না নিয়ে তাকিয়ে আছো কেন এভাবে? কি দেখছো এমন করে? আশ্চর্য এই লোক কথা বলে না কেন? নূহা একের পর এক প্রশ্ন করে যেতে শুরু করলেও হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিলো না জাওয়াদ। কি হয়েছে তোমার? আবারো প্রশ্ন করলো নূহা।

কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চা নিয়ে পাশে রেখে নূহার হাত নিজের হাতে টেনে নিলো জাওয়াদ। আজ সারা বিকেল বসে সে নূহার হাতে মেহেদী পড়িয়েছে। নিজের যত্নের কাজটিকে মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।

আজকের আগে মেহেদী কখনো এত সুন্দর রঙ রেখে যায়নি আমার হাতে জানো? বেশ মুগ্ধ কণ্ঠে বললো নূহা।

কারণ আজকের আগে তো কেউ মেহেদীর সাথে ভালোবাসার রঙ মিশিয়ে তোমার হাতে পড়িয়ে দেয়নি। ধীরে ধীরে বললো জাওয়াদ।

হাসলো নূহা। হুমম, তাও অবশ্য ঠিক। জানো তোমার মেহেদীর ঘ্রাণ ভীষণ পছন্দ জেনে আমি চুলেও মেহেদী দিয়েছি আজ। টের পাচ্ছো না?

এজন্যই চারপাশ মেহেদীর ঘ্রাণে স্নাত হচ্ছে বুঝতে পারলো জাওয়াদ। যদিও মুখে কিছুই বললো না। নূহার চুড়ি ভর্তি হাতে জাওয়াদের আঙ্গুলের নাড়াচাড়া রুমঝুম তরঙ্গ ছড়িয়ে দিলো বাতাসে।

হাত ছাড়িয়ে নিয়ে নূহা বলল, চা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে কিন্তু আমি আর গরম করে এনে দেবো না বলে দিচ্ছি। হয়েছে কি তোমার আজ বলো তো? এমন গুম ধরে আছো কেন?  

জাওয়াদ হেসে বলল, একটা বইয়ে পড়লাম নীরবতা নাকি একে অন্যের মনে সুরঙ্গ তৈরিতে সাহায্য করে। কথাটার সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছি। তোমার মনের ঠিক কোথাও সুরঙ্গ তৈরি করা যায় সেটাও খুঁজে দেখছি।

নূহা হেসে বলল, প্রথম কথা হচ্ছে সবকিছুর সত্যতা যাচাই করতে নেই। বিশেষ করে রূপকের। এতে রূপক তার সৌন্দর্য হারায়।

হুমম, বুঝলাম। তা আপনার দ্বিতীয় কথাটা কি?

দ্বিতীয় এবং গুরুত্বপুর্ণ কথা হচ্ছে, কারো মনে ঢোকার জন্য পথ তৈরি করতে চাইলে চেষ্টা করে দেখা যায়। কিন্তু কখনোই মনে সুড়ঙ্গ বানাতে যাওয়া ঠিক নয়।

কেন?

কারণ সুড়ঙ্গের মধ্যে অনেক আঁধার থাকে, ঘাটতি থাকে অক্সিজেনের। আর পথ তৈরি করার সময়  সুর্য যদি ডুবেও যায় রাতের আকাশে চাঁদের আলোতে পথ খুঁজে নেয়া যায়। চাঁদ না থাকলে তারারা টিমটিমে প্রদীপ হয়ে জ্বলে পথে পথে। ক্লান্ত হলে গাছের নিচে বসে জিরিয়ে নেয়া যায়। আর কিছু না হোক মুক্ত বাতাসে অন্তত প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়া যায়।

তোমাকে খোঁচালে বেশ লাভ হয় বুঝলে! দারুণ সব কথা শোনা যায়। কিন্তু তুমি আমাকে এখানে নিয়ে কেন এলে সেটাই তো এখনো বলোনি।

কিছুটা ক্ষণ নীরবতার পর নূহা বলল, মনের মাঝে গচ্ছিত কিছু কথা ছিল! কিন্তু বর্ণগুলোকে কিছুতেই একসাথ করে শব্দ রূপান্তরিত করতে পারছিলাম না! তোমার সাথে তাই কিছুটা সময় কাটাতে চাচ্ছিলাম একাকী। যাতে গুছিয়ে নিতে পারি ছড়িয়ে থাকা বর্ণগুলোকে, রাঙিয়ে নিতে পারি রঙহীন শব্দগুলোকে!

হাসলো জাওয়াদ। আচ্ছা তো আজ আমার জীবনসঙ্গিনী খুব কাব্যিক মুডে আছেন এখন? ঠিকআছে আমিও তাহলে কাব্যিক মুডে চলে গেলাম।

নূহা হেসে বলল, তুমি কি জানো আমাদের বিয়ের পর আজ প্রথম পূর্ণিমা?

তুমি বলার সাথে সাথেই আমি ব্যাগ গুছিয়ে তোমার সাথে গ্রামের বাড়ি চলে এলাম সেটাই কি বলে দেয় না যে আমিও জানি আজ আমাদের বিবাহিত জীবনের প্রথম পুর্ণিমা?

হেসে ফেলেছিল দুজনই একসাথে। সেই রাতে আকাশ থেকে চাঁদ ক্লান্তিহীন ঝরিয়ে যাচ্ছিলো জোছনার শিশির! প্রতিটি শিশির বিন্দুতে স্নাত মনের অনুভূতিরাও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছিল দুজনার। নূহার ভাবুক মন গুনগুন করে বলেছিল, আকাশে আজ আলোর বিচ্ছুরণ, বান ডেকেছে জোছনা। ভাবনারা ঝরছে অবিরাম রিমঝিম তুলে মুগ্ধতার মূর্ছনা। তারাগুলো টিমটিম জ্বলে স্বপ্নকে দেখাচ্ছে পথ রাহবার হয়ে, ভালোবাসার নিঃশব্দ কোলাহলে মেতেছে মন তোমার চোখে চেয়ে।

হঠাৎ বেজে ওঠা সেলফোনের রিংটোন প্রচন্ড ভাবে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো জাওয়াদের ভাবনার জগতের দুয়ারকে। চোখ খুলে পাশ থেকে সেলফোন তুলে নিলো। স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো হসপিটালের নাম্বার ভাসছে।        

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন