রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৬

নিয়তি......১২




জাওয়াদের যদিও ইচ্ছে ছিল নূহার বাসার গেটে খালামণিকে নামিয়ে দিয়েই চলে যাবে। কিন্তু জাওয়াদের গাড়ি যখন গেটে পৌছোলো বাচ্চারা তখন নীচে বাগানে খেলছিল। গাড়ি দেখা মাত্রই পাপা বলে চিৎকার করতে করতে ছুটে এলো চারজন। তারপর জাওয়াদকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই টানতে টানতে গাড়ি থেকে বের করে, টানতে টানতেই বাসায় ভেতরে নিয়ে গেলো। মিসেস নুসরাত অবশ্য প্রচন্ড খুশি হলেন বাচ্চাদের এই কান্ডে। তিনিও মনে মনে চাইছিলেন জাওয়াদকে বাসায় ঢোকাতে। কিন্তু জাওয়াদ রাজী হবে না বলে বলেননি। বলার আগেই মনের ইচ্ছে পূরণ হতে দেখার আনন্দই অন্যরকম। মিসেস নুসরাতের মনের ভেতরও তাই আনন্দ গুঞ্জরন তুলে যাচ্ছিলো। বাচ্চাদের হৈচৈ শুনে নূহা আর আফজাল সাহেব দরজার কাছে এসেছে দাঁড়িয়েছিল। সিঁড়িতে বাচ্চাদের সাথে জাওয়াদকে দেখে চুপচাপ ভেতরে চলে গেলো নূহা। আফজাল সাহেব বিশাল হাসি দিয়ে বললেন, তোমরা চারজন মিলে এভাবে চেপে ধরে রেখেছো কেন তোমাদের পাপাকে?

নাবিহা বলল, জাল দাদাভাই নয়তো পাপা পালিয়ে যাবে।

আফজাল সাহেব বললেন, আবারো জাল দাদাভাই? কত বার করে বলেছি আমাকে জাল দাদাভাই না ডাকতে? নিজেকে নকল দাদাভাই, নকল দাদাভাই মনেহয়।

হেসে ফেললো বাচ্চারা চারজনই। জাওয়াদও হেসে বলল, বাপী তুমি ওদেরকে নিষেধ করা ছেড়ে দাও। তাহলে দেখবে ওরাও তোমাকে জাল দাদাভাই ডাকা ছেড়ে দেবে।

জিশান হেসে বলল, আমাদের কোন দোষ নেই এখানে। আরমান নানাভাই পাপা আর মা’র মামা তাই আমরা মানা ভাই ডাকি। তুমি আমাদের পাপা-মা’র চাচা তাই আমরা চাদা ভাই ডাকতে চেয়েছিলাম। তুমিই তখন বলেছিলে চাদা ভাই ডাকলে আমাকে একটা একটা করে দাঁত তুলে ফেলবে আমাদের। সেজন্যই আমরা চিন্তা ভাবনা করে আফজাল থেকে তোমাকে জাল দাদাভাই বানিয়ে ফেলেছি।

আলহামদুলিল্লাহ এই ধরণের কর্মকান্ড শুধু তোমরাই করতে পারো। আমি গর্বিত তোমাদের মতো জিনিয়াস বাচ্চাদের পিতা হতে পেরে। হাসতে হাসতে বললো জাওয়াদ।

বাচ্চারা আনন্দে চিৎকার করে উঠলো। হাসলেন আফজাল সাহেবও। এরপর সবাই মিলে ভেতরে ঢুকলেন।

মিসেস নুসরাত সরাসরি কিচেনে চলে গেলেন। খালামণিকে দেখে নূহা হেসে সালাম দিয়ে বলল, এত দেরি হলো কেন তোমাদের আসতে? ফোন দিয়েছিলাম কিছুক্ষণ আগে মামণি বললো তোমরা নাকি আড়াই ঘন্টা আগে বেড়িয়েছো। আসতে তো বড় জোর দেড় ঘন্টা লাগার কথা।

সালামের জবাব দিয়ে মিসেস নুসরাত বললেন, তোদের সবার জন্য আইসক্রিম আনতে গিয়েছিলাম। সেই সুযোগে আমরা মা-ছেলে ছোট্ট একটা আইসক্রিম ডেটও করে এলাম।

নূহা হেসে বলল, আহা বেশ বেশ। আচ্ছা খালামণি দেড়টা বেজে গিয়েছে উনি কি লাঞ্চ করে যাবেন কিনা জিজ্ঞেস করে দেখো। আমার রান্নাও হয়ে গিয়েছে।

মনেহয় না লাঞ্চ করবে। আজ অনেক দেরি করে সকালের নাস্তা করেছে।

ও ঠিকআছে। অবশ্য আমি আজ আমিত্তি বানিয়েছি। উনি খুব পছন্দ করেন। তুমি নিয়ে যাও যদি ইচ্ছে হয় খাবেন।

মিসেস নুসরাত বিরক্ত কন্ঠে বললেন, তোদের ব্যাপার স্যাপার আমার বোধগম্য হয় না। একই হসপিটালে ডিউটি করিস দুইজন। কনফারেন্স, মিটিং, ক্যাম্পিং কত কিছু অ্যাটেন্ড করিস একসাথে। তখন তো একে অন্যের সামনে যেতে সমস্যা হয় না তোদের। বাড়ির মধ্যে এমন দেয়াল তুলে বসে থাকিস কেন?

তুমি আমাদের প্রফেশনাল এবং পার্সোনাল লাইফকে মিক্সআপ করার চেষ্টা কেন করছো খালামণি? এবং তোমার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, কনফারেন্স, মিটিং, ক্যাম্পিং খুব কম সময়েই আমরা একসাথে অ্যাটেন্ড করি। হসপিটালেও উনি এক ডিপার্টমেন্টে আর আমি আরেক ডিপার্টমেন্টে। মাসেও একবার দেখা হয় না আমাদের।

দেখা যাতে না হয় সেই চেষ্টা করলে দেখা হবে কিভাবে?

মানে? তুমি ঠিক কি বলতে চাইছো খালামণি?

বলতে চাইছি তোদের এত ভয় কিসের স্বাভাবিক জীবন যাপন করার ব্যাপারে?

নূহা হেসে বলল, বুঝেছি আজও আমি খাল কেটে কুমীর টেনে এনেছি নিজ গৃহে। আচ্ছা খালামণি তুমি কি মজা পাও আমাদের দুজনকে খুঁচিয়ে?

মজা পাবো কেন? আমি শুধু তোদেরকে ভুলটাকে ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করি সবসময়।

খালামণি আমাদের জীবনে এমন পরিস্থিতি প্রায়ই আসে যখন আমরা আমাদের প্রিয়জনদের জন্য একটা জিনিস পছন্দ করি, কিন্তু তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছুকে নির্ধারণ করে নেয় নিজের জন্য। এমতাবস্থায়, তাদের পছন্দটাকে যদি মেনে নিতে কষ্ট হয়। তাহলে সেটাকে এড়িয়ে চলা উচিত। কিন্তু কখনোই আপনজনদেরকে ভুল প্রমাণিত করার জন্য উঠে পড়ে লাগা ঠিক না। তুমি গত এগারো বছর ধরে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছো আমাদের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করার জন্য। খালামণি আমাদের সিদ্ধান্ত সম্পাদ্য বা উপপাদ্য নয় যে তুমি কয়েকটা রেখা টেনে প্রমাণিত বলবে আর সাথে সাথে আমরা সেটা একসেপ্ট করে নেবো।

তুই এত কঠিন কথা কিভাবে বলিস? জাওয়াদ তো কখনো তোর মতো মনে আঘাত দিয়ে কথা বলে না। কিন্তু তোর কথা তো না যেন বিষ। এজন্যই এই দুনিয়াতে কারো ভালো চাইতে নেই। তা না হলে যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর প্রবাদের জন্মই হতো না।

নূহা হেসে বলল, কারো ভালো চাইতে দোষ নেই। তবে লাইন ছাড়া বেলাইনে ভালো চাইতে গেলে কথা তো শুনতেই হবে। আর নিজের জন্য করো বা অন্যের জন্য চুরি তো চুরিই। শারীরিক চুরির শাস্তি হাত কর্তন আর মানসিক চুরির শাস্তি দুর্বুদ্ধি নিধন।

আমি তোকে দুর্বুদ্ধি দেই? আমি? চোখ মুখ আঁধারে ঢেকে প্রশ্ন করলেন মিসেস নুসরাত।

নূহা হেসে বলল, আরে নাহ! আমি তো জাস্ট ছন্দ মিলানোর চেষ্টা করেছি। আচ্ছা যাও সরি। এসব কথা ঢাকনা দিতে ঢেকে রাখি চলো। এই নাও আমিত্তি। উনাকে দিয়ে আসো। এখন খেতে না চাইলেও সমস্যা নেই। যাবার সময় নাহয় প্যাক করে দিয়ে দেবো।

নূহার হাত থেকে প্লেট নিয়ে চুপচাপ চলে গেলেন মিসেস নুসরাত।


ঐদিকে জাওয়াদকে টানতে টানতে রুমে ঢুকিয়েই সারা সকাল বসে বানানো স্পেসশীপের কাছে নিয়ে গেলো জারিফ। স্পেসশীপের কাছে বসে চোখ বড় বড় করে জাওয়াদ বলল, ওয়াও মাশাআল্লাহ। এত সুন্দর স্পেসশীপটা কি আমাদের জারিফ সোনা বানিয়েছে?

জারিফ মহা আনন্দিত কন্ঠে বলল, জিহাদ ভাইয়া আর জিশান ভাইয়াও আমাকে সাহায্য করেছে। স্পেশশীপ বানানো হয়ে যাবার পর আপ্পি উপরের এই স্যাটালাইট এন্টেনা টা লাগিয়ে শুধু। কিন্তু আপ্পি বলে স্পেশশীপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটিই নাকি আপ্পি করেছে। স্যাটালাইট এন্টেনা ছাড়া নাকি স্পেসশীপের কোন মূল্যও নেই।

জাওয়াদ হেসে ফেললো। এরপর ছোট্ট করে পাশে বসে থাকা দুষ্টু মেয়েটার কান টেনে দিয়ে বলল, এই স্পেশশীপ দিয়ে কি হবে এখন?

জারিফ হেসে বলল, বিকেলে আদীব্বা আসবে। আদীব্বা বলেছে তখন স্পেসশীপে করে আমাদেরকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। পাপা তুমি যাবে আমাদের সাথে?

জাওয়াদ হাসি মুখে বলল, বিকেলে যে পাপাকে হসপিটালে যেতেই হবে। আজ তোমরা আদীব্বার সাথেই ঘুরে এসো। পাপা ইনশাআল্লাহ আরেকদিন স্পেশশীপে চড়ে ঘুরতে যাব তোমাদের সাথে।
জিশান হেসে বলল, আদীব্বা আমাদেরকে অতীত ভ্রমণে নিয়ে যাবে। পাপা তোমার সাথে তাহলে আমরা ভবিষ্যৎ ভ্রমণে যাব ইনশাআল্লাহ। ঠিকআছে?

জাওয়াদ হেসে বলল, উহু মোটেই ঠিক নেই। আমরা যেদিন ভ্রমণে বেরোবো বর্তমান সময়ের পথে পথে ঘুরে বেড়াবো ইনশাআল্লাহ।

পথে পথে ঘুরে বেড়াবো কেন পাপা? প্রশ্ন করলো জিহাদ।

ফুল ছড়িয়ে দেবার জন্য তাই না পাপা? ভাইয়া, জিশান, জারিফ মনে নেই তোমাদের মামণি কি বলেছিল? নতুন প্রভাতের স্বপ্ন জাগিয়ে, রংধনুর সাত রঙে রাঙিয়ে। ভালোবাসার অকৃত্রিম বাঁধনে জড়িয়ে, পথে পথে যাবো মোরা ফুল ছড়িয়ে ইনশাআল্লাহ।

জাওয়াদ হেসে বলল, ইনশাআল্লাহ চলার পথে অন্যেদের জন্য অবশ্যই আমরা ফুল ছড়িয়ে যাব। কিন্তু আমাদের নিজেদের জন্য যেখানেই সুযোগ পাবো বীজ বুনে দিতে দিতে এগিয়ে যাব। যাতে ভবিষ্যৎ চলার পথ ফুল বিছিয়ে আমাদের প্রতীক্ষায় থাকে। বুঝেছো আমার কথা?

জিহাদ বলল, জ্বি পাপা বুঝেছি। ভবিষ্যৎ তখনই সুন্দর হয় যখন মানুষ বর্তমানকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করে।

জাওয়াদ হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ একদম ঠিক বলেছো। আচ্ছা তোমরা খেলা করো। আমাকে এখন উঠতে হবে।

আরো কিছুক্ষণ বাচ্চাদের সাথে কথা বলে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে জাওয়াদ বেরোচ্ছিল তখন নুসরাত খালামণি হাজির হলেন আমিত্তি নিয়ে।

জাওয়াদ বলল, এখন তো খেতে পারবো না খালামণি।

তাহলে একটু অপেক্ষা কর প্যাক করে এনে দিচ্ছি।

তারচেয়ে বরং তুমি আর বাপী বাড়িতে যাবার সময় নিয়ে যেও। আমি রাতে খাবো ইনশাআল্লাহ।

জাওয়াদ বেরিয়ে যাবার পরও অনেকক্ষণ দরজা ধরে দাঁড়িয়ে রইলেন মিসেস নুসরাত। এরপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে দরজা বন্ধ করে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ালেন।

@

দূর থেকে চেহারার অবস্থা দেখে স্ত্রীর মেজাজের আবহাওয়ার পূর্বাভাস টের পাওয়া যাচ্ছিলো। তাই  পাশে গিয়ে বসবেন কি বসবেন না কিছুক্ষণ এই দোদূল্যমনতায় ভুগে শেষপর্যন্ত মিসেস নুসরাতের পাশে গিয়ে বসলেন আফজাল সাহেব। একবার স্বামীর দিকে তাকিয়ে আবারো আকাশের দিকে চোখ ঘুরিয়ে নিলেন মিসেস নুসরাত।

এই জগতের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হচ্ছে কারো প্রতি নিজ মনের আবেগকে যথাযথ বুঝতে না পারা এবং বোঝার পরেও মূল্যায়ন করতে না পারা। কে বলেছে ভালোবাসার অনুভূতি সবসময় ফুল-পাখী, চাঁদ-তারা, বৃষ্টি ইত্যাদির আবেশ মেখেই আমাদের কাছে আসে? যখন কারো মেজাজ গরম করা, গা জ্বালানো কথা না শুনে দিন পার করাটা কষ্ট হয়ে দাঁড়ায়, কারো সাথে এক পশলা তর্ক-বিতর্ক না হলে মন স্বস্থির ঢেঁকুর তোলে না, যখন কারো শব্দদের অকারণ গুঞ্জরন ছাড়া বুকের মধ্যে শূন্যতা পাক খেয়ে বেড়ায়, যখন প্রচন্ড বিরক্তকর জানার পরেও মন কারো পথ চেয়ে বসে থাকে, এসবও ভালোবাসার অনুভূতি। হুম, এসব অশান্ত মনের, অশান্ত ভালোবাসার, অশান্ত অনুভূতি। ভীষণ সুন্দর না কথাগুলো? এই কথাগুলো শোনার পর আমি নতুন করে অনুভব করলাম কতটা ভালোবাসি তোমাকে। আসলে অশান্ত মনের, অশান্ত ভালোবাসাকে আমি শান্ত মনে অনুভব করতে চেয়েছিলাম। তাই বুঝতে পারিনি। বলতে বলতে স্বশব্দে হেসে ফেললেন আফজাল সাহেব।

প্রচন্ড বিরক্ত চোখে স্বামীর দিকে তাকিয়ে মিসেস নুসরাত বললেন, এসব কথা কোথায় পেয়েছো তুমি? নূহা বলেছে?

আফজাল সাহেব হেসে বললেন, আরে না নূহা বলেনি।

তাহলে কে বলেছে? জাওয়াদ?

আফজাল সাহেব হেসে বললেন, উহু, আদী একদিন কথায় কথায় বলেছিল।

আদী? তুমি আমাকে আদীর বলা কথা শোনাতে এসেছো? তুমি জানো না আদী কত বড় সাইকো? ওর কথা শুনলে আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়।

নিজের ছেলে সম্পর্কে কিভাবে এমন করে বলো তুমি নুসরাত? আমিও আদীর ফান করার স্বভাবটা সবসময় ঠিক হজম করতে পারি না। কিন্তু ও যে অসাধারণ একটি ছেলে এতে কোনই সন্দেহ নেই।

অসাধারণ অসাধারণ করো না। এই শব্দটা শুনলেই আমার এখন রাগ হয়। নীরবে দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে সন্তানরা অসাধারণের সার্টিফিকেট পাক কোন মা এটা চাইতে পারে না। আমিও চাই না। আমার মন চায় যদি খুব সাধারণ হতো আমাদের ছেলেমেয়েগুলো। খুব খুব বেশি সাধারণ। যাদের কাছে নিজের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই হতো না। তাহলেই ভালো হতো।

আফজাল সাহেব হেসে বললেন, এই কথা তুমি না নুসরাত সন্তানদের কষ্টে ছটফট করতে থাকা তোমার মাতৃত্ব বলছে। জানো? এই জগতে কিছু মানুষ আছে যারা তখনই আনন্দিত হয়, যখন তাদের সামনে কেউ দুঃখী হয়। অন্যেকে ব্যথা, আঘাত না করে কিছু মানুষ নিজে ভালো থাকতে পারে না। কারণ এই ধরণের মানুষেরা জানে না যে, তার ভালো থাকাটা অন্যের খারাপ থাকার শর্ত না। তারা জানে না সুখ আসলে কোন প্রতিযোগিতা নয় যে, একজনকে না হারিয়ে নিজে জেতা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে সুখ হচ্ছে ছোট্টবেলার সেই চড়ুইভাতি খেলার মতো। যা একসাথে সবাই মিলে উপভোগ করা যায়। কিন্তু এই তথ্যটি জানা থাকে না বলেই সুখ নিয়ে মানুষের এত কাড়াকাড়ি, এত টানাটানি। এত রেশারেশি, এত হানাহানি। এত হিংসা, এত ঘৃণা ও বিদ্বেষ, অকারণ আঘাত, অমূলক আদেশ।

বাহ! একদম দেখি ছেলেমেয়েদের সুরে কথা বলা শিখে ফেলেছো।

আফজাল সাহেব হেসে বললেন, এটা আমাদের সৌভাগ্য নুসরাত আমাদের পরিবারের প্রতিটা সন্তান ওই তথ্যটা জানে এবং সেজন্যই অন্যকে দুঃখী করে কখনোই নিজেরা সুখী হতে চায় না। কারণ ওরা আরেকটা তথ্যও জানে এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যে, পুরো পৃথিবীর মানুষ এক হয়েও ওদের ভাগ্যে থাকা সুখ থেকে ওদেরকে মাহরুম করতে পারবে না। ঠিক তেমনি ভাগ্যে থাকা কষ্টও ষোল আনাই ভোগ করতে হয় প্রত্যেককে। তুমিও তো জানো এই তথ্য তাই না?
দু’চোখ বেয়ে ঝরঝর অশ্রু নেমে এলো মিসেস নুসরাতের। কাঁদতে কাঁদতেই বললেন, আমি জানি না কেন এতটা বছর পেরিয়ে যাবার পরেও আমি জাওয়াদ আর নূহার বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারি না। আমি সব মেনে নিয়েছি কিন্তু ওরা দুইজন এখন আর একাকার নেই আমার মন এটা কিছুতেই মানতে রাজী না।

হাত বাড়িয়ে স্ত্রীকে কাছে টেনে নিলেন আফজাল সাহেব। কথার প্রসঙ্গ অন্যদিকে ঘোরানোর উদ্দেশ্যে হাসি মুখে বললেন, অথচ তুমিই পরিবারে একমাত্র ব্যক্তি ছিলে যে জাওয়াদ আর নূহার বিয়ের তীব্র বিরোধিতা করেছিলো।

অশ্রু চোখেই হাসি ফুটে উঠলো মিসেস নুসরাতেও মুখে। বললেন, হুম, আপাদের সাথে চিৎকার চেঁচামেচি তো করেছিলামই, জাওয়াদকেও কত বকাঝকা যে করেছিলাম নূহাকে বিয়ে করতে চাওয়ার কারণে। আসলে ওদের বয়সের ডিফারেন্স এত বেশি ছিল। তারউপর আমার ছোট্ট টুনটুনি নূহার পাশে যখন দৈত্যের মতো জাওয়াদকে চিন্তা করতাম, মনে হতো এখনই আমার হৃদপিণ্ড ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। জাওয়াদের পাশে গিয়ে যখন দাঁড়াতো খুঁজেই পাওয়া যেত না নূহাকে। যদিও শেষপর্যন্ত পরিবারের সবার সম্মতির সামনে আমার একার অসম্মতি টেকেনি। আমাদের ছোট্ট পরী দৈত্যের ঘরেই গিয়েছিল বৌ হয়ে।

হেসে ফেললেন আফজাল সাহেব। মিসেস নুসরাতও হাসি মুখে বললেন, বিয়ের আগে নূহাকে একদিন প্রশ্ন করেছিলাম, তুই কেন তোর চেয়ে ডাবল এইজের একটি ছেলেকে বিয়ে করতে চাইছিস? পাকনা  বুড়িটা জবাবে বলেছিল, জানো খালামণি একজন মানুষের জীবনে দুইজন মানুষ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন, যার ক্ষমতা থাকে যে কোন মূহুর্তে তার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে তোলার। আরেকজন, থাকে যে তার ক্ষমতা গুণে কাঁদিয়ে দিতে পারে যে কোন সময়েই। কিন্তু কারো জীবনে যখন একজন ব্যক্তিই অতি চমৎকার ভাবে এই দুইটি কাজ করে যেতে পারে। তখন তার জীবনে ঐ ব্যক্তিটির চেয়ে অমূল্য মনেহয় কিছুই থাকে না, কেউই হতে পারে না। যে নিষ্ঠার সাথে ঢেউ তুলে দেয় আনন্দ্রাশ্রুর টলটলা দীঘিতে। অতঃপর অবজ্ঞায় ছড়ায় আর্তনাদ পুষ্পিত হাসিতে। উনি আমার জীবনে ঠিক এমন একজন। আমার ভুবনকে আলোকিত করা এবং আঁধারে ঢেকে দেয়ার সুইচবোর্ড যার হাতে। উনি এক মূহুর্তে আমাকে হাসিয়ে পরমূহুর্তেই কাঁদিয়ে দিতে পারেন এবং এর পরের মূহুর্তেই আবার ঠোঁটের কোণে সাজিয়ে দিতে পারেন হাসির ফুল।

ওদের দুজনের একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা যেমন অন্যরকম। সেই ভালোবাসাকে ঘিরে ওদের সংজ্ঞাও ভিন্ন।

হ্যা। ঐদিন আমি জাওয়াদের প্রতি নূহার ভালোবাসাকে আঁচ করেছিলাম। আর নূহার প্রতি  জাওয়াদের ভালোবাসা দেখেছিলাম বিয়ের এক সপ্তাহ আগে করা নূহার এক্সিডেন্টের পর। আমি ভুলতে পারিনা হসপিতালে ওদের বিয়ের সেই দৃশ্যটা। ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়া অপ্রতিরোধ্য কান্না সামলাতে গিয়ে কবুল বলতেই পারছিল না জাওয়াদ। আর নূহা খিলখিল করে হাসতে হাসতে কবুল বলেছিল। তারপরও আমি মনে মনে শঙ্কিত ছিলাম ওদের বিয়েটা টিকবে কিনা ভেবে। কিন্তু আমার সমস্ত শঙ্কা-দুশ্চিন্তা ওদের ভালোবাসা দেখে লজ্জিত হয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।  আমি ভাবতাম নূহা কিভাবে মানিয়ে চলবে জাওয়াদের রাশভারি স্বভাবের সাথে। কিন্তু আমাদের সবাইকে হতভম্ব করে দিয়ে জাওয়াদই উল্টো ওর টিনেজে ফিরে গিয়েছিল নূহার হাত ধরে।

আফজাল সাহেব হেসে বলল, আসলেই ওদেরকে দেখে মনেহতো একে অন্যেকে ভালোবাসা ছাড়া বুঝি আর কোনই কাজই নেই দুইজনের।

অথচ এখন ওরা কত শত কাজ করে। শুধু একে অন্যেকে ভালোবাসতে পারে না।

এখানে তো আমাদের কারো কোন হাত নেই নুসরাত। তারচেয়েও বড় কথা ওরা যেহেতু নিজেদের ভাগ্যেকে মেনে নিয়েছে। আমাদের উচিত ওদেরকে সাপোর্ট করা। তুমি তাই ওদের সাথে রাগ করো না। আসার পর থেকেই দেখছি তুমি নূহার সাথে খিটপিট করছোই এটা সেটা নিয়ে। লাঞ্চের পর নূহা বললো, চলো সবাই মিলে মজার কোন খেলা খুঁজে বের করি। তুমি কিছুই না বলে চুপচাপ উঠে এখানে এসে বসলে। তোমার পিছু পিছু আমিও উঠে এলাম। চল ভেতরে যাই। কিছুক্ষণ সময় কাটাই সবার সাথে। নূহা মনেহয় কিছুক্ষণ পর হসপিটালে যাবে ওর বাবাকে দেখার জন্য।

মিসেস নুসরাত উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, হ্যা চলো যাই।

@

বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাড়ির মেইন গেটের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ছিল নূহা। আরো প্রায় আধঘন্টা আগে রাহাত এবং আদী ভাইয়ার পৌঁছে যাবার কথা ছিল। দুজনের কাছে বাচ্চাদেরকে রেখে হসপিটালে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু দুইজনের একজনেরও কোন দেখা নেই। গতকাল বিকেলেও হয়তো বাসায় ফেরা হতো না। হসপিটালে বাবা উঠার অপেক্ষাতে বসে থাকতো নূহা। কিন্তু বাচ্চারা বাসায় আসার বায়না ধরলে বাধ্য হয়েই সবাইকে নিয়ে বাসায় চলে এসেছিল। এরপর আজকের সারাদিনও পেরিয়ে গিয়েছে যাওয়ার সুযোগ পায়নি হসপিটালে। খুব অস্থির লাগছিল নূহার বাবাকে এক নজর দেখার জন্য। আবার বাচ্চাদেরকে একা বাসায় রেখে যাওয়াও সম্ভব নয়। বাপী আর ছোট খালামণির কাছে রেখেই যাওয়া যেত কিন্তু নাবিহা তাতে রাজী না। নূহার কানের কানে মুখ এসে আস্তে আস্তে বলেছিল, মামণি চাদা ভাই আর চাদী মণির স্পেশালিটি হচ্ছে সারাক্ষণ সবাকে বকাঝকা করা। তুমি এমন খিটপিটে স্বভাবের বুড়াবুড়ির কাছে তোমাদের কলিজার টুকরোদের কিভাবে রেখে যেতে চাইছ? হেসে ফেলেছিল নূহা নাবিহার কথা শুনে। এখনো মুখে হাসি ফুটে উঠলো। নাবিহার মধ্যে নিজের এবং জাওয়াদের চেয়েও আদী ভাইয়ার প্রভাব বেশি ফিল করে নূহা। সারাক্ষণ দুষ্টু কথা বলার সুযোগের সন্ধানে থাকে আদী ভাইয়া। নাবিহাকেও আজকাল ঠিক তাই করতে দেখা যাচ্ছে।

মামণি বাবা আর আদীব্বা ফোনও ধরছে না। বলতে বলতে বারান্দায় এসে নূহার পাশে এসে দাঁড়ালো নাবিহা।

নূহা বলল, হুম, ফোনও ধরছে না দুইজন। আমিও কয়েকবার ফোন দিয়েছি।

ধরলেই তোমার ধমক খেতে হবে তো তাই মনেহয় ভয়ে ধরছে না। তোমাকে সবাই খুব ভয় পায়। হাসতে হাসতে বললো নাহিবা।

সবাই ভয় পায় মানে? কে কে?

পাপা, বাবা, আদীব্বা, ভাইয়া, জিশান, জারিফ সবাই।

আর নাবিহা? দুষ্টুমি মাখা স্বরে প্রশ্ন করলো নূহা।

নাবিহা হেসে বলল, মামণি তো এখন নাবিহার বন্ধু। বন্ধুকে ভয় পেতে নেই তাই ভয় না পাবার চেষ্টা করছি।

নূহা হেসে বলল, জিহাদ, জিশান আর জারিফও তো আমার বন্ধু। ইনফ্যাক্ট, তোমার পাপা, বাবা এবং আদীব্বা আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।

মামণি আমিও তোমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হতে চাই। কাছের বন্ধু হতে চাইলে আমাকে কি কি করতে হবে?

নূহা হেসে বলল, জানো এই পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ থাকেন জীবন যখন তপ্ত দাহ নিয়ে হাজির হয়, সেই মানুষরা হন প্রশান্তিকর ঘন ছায়া! আত্মিক পিপাসায় পিপাসাক্ত পথিক তাদের মাঝে খুঁজে পায় প্রশান্তিকর মিঠা পানির সরোবর! হতাশার ঘোর অমানিশায় তারা জ্বালিয়ে যান আশার প্রদ্বীপ! অসহায়ত্বের প্রাণে জাগায় নির্ভরতার আশ্বাস। পথহারাকে আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে দেন গন্তব্যের দিশা! ভালোবাসার রেণু ঝরিয়ে যায় তারা শব্দে শব্দে! ধূসর গোধূলি বেলা তাদের পরশে পরিণত হয় মাহেন্দ্র ক্ষণে! ধূ ধূ মুরুভূমিকে মনেহয় চন্দ্রালো ছড়ানো শালবন! মেঘলা আকাশকে করে দেয় রোদেলা দুপুর। তারা সবসময়ই অবস্থান করেন মনের নেতিবাচক অনুভূতির বিপরীতে। অর্থাৎ, বেদনার সুরে বুনে দেয় আনন্দের বাণী। তারা আসলে ঠিক কেমন সেটা প্রকাশ যোগ্য নয়। তবে যারাই জীবনে এমন কারো সন্ধান পায়, আল্লাহর দেয়া নিয়ামত ও রহমত স্বরূপই পায়। তোমার পাপা, বাবা, আদীব্বা ঠিক এমন তিনজন মানুষ আমার জীবনে। আমি ঠিক জানি না নাবিহা কারো কাছের বন্ধু হতে হলে ঠিক কি করতে হয়। তবে মনেহয় যে যেমন তাকে সেভাবেই মেনে নিতে হয় এবং সর্বাবস্থায় তার পাশে থাকতে হয়। শারীরিক ভাবে সম্ভব না হলে মানসিক ভাবে, মানসিক ভাবেও সম্ভব না হলে, মনের কোনে এক টুকরো আশা জাগানিয়া প্রেরণা হয়ে।

আচ্ছা মামণি পাপা, বাবা আর আদীব্বার মধ্যে কে তোমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়?

নূহা হেসে বলল, একেকজন মানুষ একেক কারণে আমাদের মনের প্রিয়দের জন্য রাখা আসন গুলো দখল করে নেন। বুদ্ধিমত্তা তাই প্রিয়দের প্রিয় হয়ে থাকবে দেবার মাঝেই। কোন না কোন স্পেশালিটির কারণেই কেউ আমাদের প্রিয় হয়। কি দরকার প্রিয়দের এক এক করে দাঁড়িপাল্লায় উঠানোর। কে বেশি আর কে কম নাই বা করলাম এই হিসাব। প্রিয়রা আমাদের প্রিয় হয়েই থাক। তবে কি জানো?

কি মামণি?

যখনই আমি আমার জীবনের প্রিয় মানুষদেরকে নিয়ে ভাবতে যাই। চিন্তা করার আগেই কয়েকজন মানুষের অবয়ব ভেসে উঠে মনের পর্দায়। শত আপনজনের ভিড়ে ঐ মুখগুলো কেমন করে সবচেয়ে আপন হয়ে গিয়েছে সেটা নিজেরও অজানা। শুধু বুঝি তারা তাদের ঘন ছায়া ছাপ রেখে গিয়েছেন আমার মনের আয়নায়। যাদেরকে দেখে শিখেছিলাম জীবনকে জীবনের মত করে যাপন করতে! যাদের কাছে জেনেছিলাম জীবনে সুখী হবার সবচেয়ে শর্টকার্ট ও ফলপ্রসূ টিপস হচ্ছে,সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখা। তাহলেই কেবল মানুষ সবকিছুকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিয়ে জীবন সফরে এগিয়ে চলা অব্যহত রাখতে পারে। সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে জীবনের উত্থান-পতনকে। যাদেরকে দেখে বুঝেছিলাম, নিজের সমস্যা ও কষ্টকে কখনোই বড় করে দেখতে নেই। এবং সবসময় এটা স্মরণে রাখতে হয় যে, যা ঘটার কথা ছিল তাই ঘটেছে,আর যা ঘটেছে তার মধ্যেই নিহিত আছে কল্যাণ।

আমিও তোমার মতো করে জানতে, শিখতে ও বুঝতে চাই মামণি। তুমি আমাকে সাহায্য করবে?

নূহা হেসে বলল, ইনশাআল্লাহ আমি অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করবো সোনা। আর প্রিয় মানুষদের কাজই হচ্ছে তারা আমাদেরকে জীবনকে চিনতে, জানতে ও বুঝতে শেখায়! তাদের কথা এই উপলব্ধি জাগায় যে জীবন যদি নিস্তব্ধতার আঁধারে ঢেকে যায়, তবুও সেটা আমাদের জন্য আল্লাহর দেয়া আমানত। দুঃখের অমানিশায় তাই জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিয়ে হাত বাড়িয়ে তাকে কাছে টেনে নিতে হবে। আগাছায় ছেয়ে গিয়েছে বলে ত্যাগ না করে মমতার চোখে তাকাতে হবে জীবনের দিকে। তাহলেই চোখে পড়বে আগাছার ফাঁকে ফাঁকে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়া ছোট্ট ছোট্ট ঘাসফুলদেরকে।

নাবিহা হেসে বলল, আমাকে কিন্তু তোমার মতো করে কথা বলাও শিখিয়ে দিতে হবে।

নূহা হেসে বলল, মামণি তোমাকে অনুভবের মেঘ জড়ো করতে শিখিয়ে দেবো। তাহলে শব্দের রিমিঝিমি বরষা ঝরবেই ইনশাআল্লাহ। ঐ যে পৌঁছে গিয়েছে তোমাদের আদীব্বার গাড়ি।

কেন এলো এত জলদি? মাত্র আমি আমার মামণির সাথে গল্প শুরু করেছিলাম। গাল ফুলিয়ে বললো নাবিহা।

মেয়েকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে আদর করে হাসি মুখে নূহা বলল, ইনশাআল্লাহ আজ রাতে আমরা দুজন অনেক অনেক গল্প করবো। আচ্ছা শোনো একদম সোনা বাচ্চার মতো থাকবে সবাই। বাবা আর আদীব্বাকে একদম যন্ত্রণা করবে না। আমি তোমাদের বিকেলের নাস্তা রেডি করে দিয়েছি। সবাই মিলে অবশ্যই খেয়ে নেবে। খেলা আর গল্পে মশগুল থেকে সবাই যাতে নাস্তা করতে ভুলে না যায় সেই দায়িত্ব তোমাকে দিয়ে গেলাম।

নাবিহা হেসে বলল, আচ্ছা ইনশাআল্লাহ। কিন্তু তুমি কখন আসবে মামণি?

ইনশাআল্লাহ রাত দশটার মধ্যেই চলে আসবো। এখন চল জিহাদ, জিশান আর জারিফের কাছে যাই। ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হবে।

নাবিহা বলল, হ্যা মামণি চলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন